শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ৮ জিলকদ, ১৪৪৫

মূলপাতা জাতীয়

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে চায় রাশিয়া: ল্যাভরভ


রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১১:০৮ : অপরাহ্ণ
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ (বামে) ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে চায় রাশিয়া। সকল ক্ষেত্রে যোগাযোগ বাড়ানো ছাড়াও সম্পর্ক গভীরতর করার পদ্ধতি কী হবে, তা নিয়ে দুই দেশ কাজ করবে।

ঢাকা সফররত দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এ কথা বলেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এক যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ব্রিফিংয়ে ল্যাভরভ বলেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের ৫০ বছরের বন্ধু। দুই দেশের পরস্পরকে পাশে দরকার। কোভিড-পরবর্তী সময়ে আপনারা বিভিন্ন সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা বিনিয়োগ বাড়াতে চাই। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে দুই দেশের বাণিজ্য ২ বিলিয়ন থেকে ৩ বিলিয়নে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে সৃষ্ট সংকট কমাতে জাতীয় একটি মুদ্রায় বিনিময়ের পদ্ধতি বের করার চেষ্টা চলছে।’

মস্কো কোনো কিছুই লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করে না দাবি করে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে শেষ করার বিষয়ে আমরা আন্তরিক। একটি ইউনিটকে দ্রুত উৎপাদনে আনতে অক্টোবরে নিউক্লিয়ার ফুয়েল বাংলাদেশে পৌঁছবে। কোনো কিছুই লুকাবার নয়। সবকিছু উন্মুক্ত রাখতে পছন্দ করে রাশিয়া। এলএনজি রপ্তানিতে আমরা প্রস্তুত আছি।’

দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভারতের পর বাংলাদেশকে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে ল্যাভরভ বলেন, ‘২০২২ সালে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য হয়েছে ৩০০ কোটি ডলারের। কী করে বাণিজ্য বাড়ানো যায় তা নিয়ে দুই দেশের মধ্যকার আন্তসরকার কমিশন খতিয়ে দেখবে।’

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে সরবরাহ ব্যবস্থা এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন বিঘ্নিত হওয়ার কথা স্বীকার করে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দুই দেশ নিজেদের মুদ্রায় কী করে লেনদেন শুরু করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা চলছে।’

বাংলাদেশের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির প্রশংসা করে ল্যাভরভ বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত চাপ অগ্রহণযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের চাপের মধ্যেও বাংলাদেশ তার স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি বজায় রেখেছে।’

ইন্দো প্যাসিফিক ইস্যু প্রসঙ্গে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির নামে দক্ষিণ এশিয়ায় নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র চীনকে প্রতিহত ও রাশিয়াকে একঘরে করতে চায়। এটি তাদের উদ্দেশ্য। কোয়াডের মাধ্যমেও একই ধরনের চেষ্টা করেছে।’

রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে ল্যাভরভ বলেন, ‘এটা সমাধানে আমরা জাতিসংঘসহ নানা প্ল্যাটফর্মে কাজ করছি। মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করছি যা অব্যাহত থাকবে। এ ইস্যুতে পশ্চিমারা চাপ দিলে হিতে বিপরীত হতে পারে।’

ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের কাছে নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন উপায়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ নিয়ে ঢাকার মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়।

জবাবে মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে যে কোনো সংকট সমাধানের পক্ষে। এ অঞ্চলে আমরা প্রক্সি ওয়ার চাই না। এটাই আমাদের অবস্থান।’

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরে দ্বিপক্ষীয় কোনো স্মারক অথবা চুক্তি সই হয়নি।

কমবেশি ১৬ ঘণ্টার সফরে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বিকেল ৬টার দিকে জাকার্তা থেকে ঢাকায় পৌঁছান। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার ভালো সম্পর্ক থাকলেও গত ৫২ বছর দেশটি থেকে এটাই সর্বোচ্চ পর্যায়ের সফর।

ল্যাভরভ শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর তিনি জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দিল্লির পথে ঢাকা ত্যাগ করবেন।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর