রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক
প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৪৪ অপরাহ্ণ
ব্যাটিং ব্যর্থতার রোগ বাংলাদেশের পুরোনো। এশীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসরে যার প্রমাণ মিলল আরেকবার। ব্যাটিং স্বর্গ লাহোরে পাকিস্তানের গতির কাছে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। বোলিং দিয়েও পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি স্বাগতিকদের। দুই বিভাগের ব্যর্থতায় হার দিয়ে শুরু হলো বাংলাদেশের সুপার ফোর মিশন।
আজ বুধবার লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে হেসেখেলে বাংলাদেশকে সাত উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান।
এই পর্বে আরও দুটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। একটি ভারত, আরেকটি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আসরের ফাইনালে যেতে বাকি দুই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই সাকিব আল হাসানদের।
প্রথমে ব্যাট করে হারিস রউফ ও নাসিম শাহর বোলিং তোপে মাত্র ৩৮.৪ ওভারে ১৯৩ রানে গুঁটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। তাড়া করতে নেমে ৩৯.৩ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ৬৩ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় তাড়াহুড়ো করেনি পাকিস্তান। দুই ওপেনার ফখর জামান ও ইমাম-উল হক মিলে শুরুটা করেন দেখেশুনে। ওপেনিং জুটিতে দুজন করেন ৩৫ রান।
দশম ওভারে এই জুটি ভেঙে স্বস্তি এনে দেন শরিফুল ইসলাম। বাংলাদেশি পেসারের বলে লেগ-বিফোরের ফাঁদে পড়েন ফখর। রিভিউ নিয়েও টিকতে পারেননি, ফেরেন ৩১ বলে ২০ রানে।
পরের উইকেট আসে ১৫.৩ ওভারে। সেটি তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন বাবর আজমকে। ডানহাতি পেসারের নিচু হওয়া বলে ফ্লাইট মিস করে আউট হন পাকিস্তান অধিনায়ক। ২২ বলে ১৭ করে ফেরেন তিনি।
দুই উইকেট হারিয়েও চাপে পড়েনি পাকিস্তান। দলকে টেনে নেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইমাম। এই জুটিতে ভর করে জয়ের পথ সহজ করে পাকিস্তান। রিজওয়ানকে নিয়ে ধীরে সুস্থে এগিয়ে চলেন ইমাম। তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৯তম অর্ধশতক।
ইমাম-রিজওয়ানের ৮৫ রানের জুটি ভাঙেন মিরাজ। ৩২.৫ ওভারে দলীয় ১৫৯ রানে মিরাজের বলে বোল্ড হন ইমাম। আউট হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে খেলেন ৮৪ বলে ৭৮ রানের ইনিংস।
ইমাম আউট হলেও সালমান আগাকে নিয়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন রিজওয়ান। এ ম্যাচে ক্যারিয়ারের ১১তম হাফসেঞ্চুরি করা রিজওয়ান শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৭৯ বলে ৬৩ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট পান তাসকিন, শরিফুল ও মিরাজ।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের পেস ত্রয়ী শাহীন, নাসিম ও হারিসের পেস তাণ্ডবে এলোমেলো হয়ে যায় টাইগাররা।
প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৪৭ রান তুলতেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারায় সাকিব বাহিনী।
গোল্ডেন ডাকে নাসিমের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান মিরাজ। ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরে ১৬ রানে আউট হন লিটন দাস।
ওপেনার নাঈম শেখ ও তাওহীদ হৃদয় আউট হলে ৪৭ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ।
এরপর সাকিব-মুশফিক মিলে বাংলাদেশের ইনিংস মেরামত করেন। পাকিস্তানি বোলারদের সামাল দিয়ে ধীরেসুস্থে এগিয়ে যেতে থাকেন তারা। ১০০ রানের জুটি গড়েন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার।
ফিফটির পর ফাহিম আশরাফের বলে ৫৩ রানে আউট হন সাকিব। এর আগে ক্যারিয়োরের ৫৪তম ফিফটি পূরণ করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
অধিনায়ক ফেরার পর উইকেটে বড় ভরসা মুশফিকও টিকে থাকতে পারেননি বেশিক্ষণ।
হারিস রউফের বলে রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৬৪ রানে ফেরেন মুশফিক। ৮৭ বলে ৫ বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল তাঁর ইনিংস।
সাকিব ও মুশফিকের বিদায়ের পর পাকিস্তানের বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশের টেল এন্ডাররা। মাত্র ৩ রান তুলতেই বাকি তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ফলে ৩৮.৪ ওভারে ১৯৩ রানে অলআউট হয়ে যায়।
পাকিস্তানের পক্ষে মাত্র ১৯ রান খরচায় সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন রউফ। নাসিম নেন তিন উইকেট। আফ্রিদির শিকার একটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৩৮.৪ ওভারে ১৯৩/১০। (নাঈম ২০, মিরাজ ০, লিটন ১৬, সাকিব ৫৩, হৃদয় ২, মুশফিক ৬৪, শামীম ১৬, আফিফ ১২, তাসকিন ০, শরীফুল ১, হাসান ১* ; আফ্রিদি ৭-১-৪২-১ , নাসিম ৫.৪-০-৩৪-৩, রউফ ৬-০-১৯-৪, আশরাফ ৭-০-২৭-১, শাদাব ৭-০-৩৫-০, সালমান ১-০-১১-০, ইফতেখার ৫-০-২০-১)।
পাকিস্তান: ৩৯.৩ ওভারে ১৯৪/৩। (ফখর ২০, ইমাম ৭৮, বাবর ১৭, রিজওয়ান ৬৩* , সালমান ১২* ; তাসকিন ৮-১-৩১-১, শরিফুল ৮-১-২৪-১, হাসান ৭-০-৪৬-০, সাকিব ৫.৩-০-৩১-০, মিরাজ ১০-০-৫১-১, শামীম ১-০-৮-০)
ফলাফল: পাকিস্তান সাত উইকেটে জয়ী।