রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে যে বার্তা দিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট


চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৪ আগস্ট, ২০২৩ ১২:২৯ : অপরাহ্ণ

বাংলাদেশে বাইরের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে চীন। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনের বাইরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে হোটেল হিলটন স্যান্ডটনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ মন্তব্য করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

শি জিনপিং বলেন-‘জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় বাংলাদেশকে সমর্থন করে চীন। যাতে বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ ঐক্য ও স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে পারে, অর্জন করতে পারে উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবন।’

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘দৃঢ়ভাবে ‘এক চীন নীতি’ মেনে চলে বাংলাদেশ। আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বাড়াতে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করে। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। এ ছাড়া ব্রিকসের মতো বহুপক্ষীয় ব্যবস্থায় সহযোগিতা জোরদার করতেও প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ। ব্রিকসের কার্যপদ্ধতি উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য নতুন উন্নয়নের সুযোগ নিয়ে আসবে বলে বিশ্বাস করে বাংলাদেশ।’’

এ খবর দিয়েছে চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া।

এই সাক্ষাতে অন্যান্য খাতের মধ্যে অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও কৃষি সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান চীনা প্রেসিডেন্ট।

শি জিনপিং বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে প্রচলিত বন্ধুত্বের কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালে উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে কৌশলগত সহযোগিতামুলক অংশীদারিত্বে উন্নীত করেছে। এতে উভয় পক্ষের সহযোগিতা আরো গভীর হয়েছে। চীন ও বাংলাদেশ এখন নিজস্ব উন্নয়ন ও নবশক্তি সঞ্চারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন কৌশলে সমন্বয়ে আগ্রহী চীন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা গভীর হয়েছে। দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতামূলক সম্পর্ক নতুন এক পর্যায়ে নিয়ে যেতে এবং দুই দেশের জনগণ আরও উপকৃত হয় এমন অবস্থায় নিয়ে যেতে আগ্রহী চীন।

শি জিনপিং আরও বলেন, প্রত্যেকের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে একে অন্যকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে এমন কাজ অব্যাহতভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে চালিয়ে যেতে চায় চীন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, উভয় পক্ষের উচিত হবে কৌশলগত যোগাযোগ শক্তিশালী করা। বিভিন্ন বিভাগ ও বিভিন্ন পর্যায়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বিনিময় জোরদার করা।

পাশাপাশি তিনি ব্যক্তি পর্যায়ে যোগাযোগ শক্তিশালী করার আহ্বান জানান। দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধন ও সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদার করার কথা বলেন।

বাংলাদেশ নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে যোগ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিনি অভিনন্দন জানান। বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বহুপক্ষীয় বিষয়ে সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করতে চায় চীন। আন্তর্জাতিক সমতা ও ন্যায়বিচারের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষায় চীন আগ্রহী।

সিনহুয়া আরও বলেছে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফর করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি। এ বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেছেন, তার ওই সফর দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক হয়ে আছে। কোভিড-১৯ মহামারির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াইয়ে চীন যে অমূল্য সমর্থন দিয়েছে তা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহায়তার প্রশংসা করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। চীনের এই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহায়তা বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং জনগণের জীবনমানের উন্নতিতে সহায়ক হয়েছে বলে তিনি তুলে ধরেন।

শেখ হাসিনা বলেন, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশ-চীন সুসম্পর্ক। একই সঙ্গে একে অন্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না- এর ওপর ভিত্তি করে এই সম্পর্ক।

এ সময় বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের ১০ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে শি জিনপিংকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী হাসিনা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য নতুন দরজা উন্মুক্ত করে দিয়েছে বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতা। এ সময় তিনি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে প্রস্তুত বলে জানান।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর