শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে নয়াদিল্লির বার্তা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘ভারত যদি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে কিছু বলে থাকে, নিশ্চয় তা এ অঞ্চলের উপকারে আসবে।’
আজ রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রীর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের বিষয়ে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভারত সরকার অত্যন্ত পরিপক্ক উল্লেখ করে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘তারা একটা শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশ। তারা যেটা ভালো মনে করেছে, সেটাই করেছে। এটা সম্পর্কে কোনো কিছু বলার নেই।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি না কোনো দেশের বন্দিকে (প্রিজনার) বিদেশে পাঠায় কিনা?’
প্রশ্নকারী সাংবাদিককে তিনি বলেন, ‘আপনি কি জানেন কোনো দেশ, তার দেশের প্রিজনারকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠায়? যদি পাঠিয়ে থাকে আমাকে বলেন। এখানে দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা তাকে দেওয়া হচ্ছে। আর প্রিজনারকে বিদেশে পাঠায় কিনা আমার জানা নেই। আপনি যদি জানতে পারেন, তাহলে উই উইল ওয়েলকাম।’
উল্লেখ্য, ভারত শেখ হাসিনার পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা দিয়েছে বলে সম্প্রতি জার্মান সম্প্রচারমাধ্যম ডয়চে ভেলে’তে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়া বার্তায় ভারত বলেছে, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার দুর্বল হয়ে পড়লে ভূরাজনৈতিক দিক থেকে তা ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র কারও পক্ষেই সুখকর হবে না। কারণ শেখ হাসিনার সরকার দুর্বল হয়ে পড়লে জামায়াতে ইসলামীর মতো সংগঠনের ক্ষমতা বাড়বে বলে মনে করে ভারত।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র জামায়াতকে একটি রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে দেখে। মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে তুলনা করে। কিন্তু ভারত জামায়াতকে একটি উগ্র মৌলবাদী সংগঠন মনে করে।
ভারতের বার্তায় বলা হয়, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘ স্থলসীমান্ত আছে। বাংলাদেশে জামায়াতের মতো সংগঠন শক্তিশালী হলে ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা সমস্যার মুখে পড়বে। জামায়াতের মতো সংগঠনের সঙ্গে পাকিস্তানের নিবিড় যোগ আছে বলেই মনে করে ভারত।
এ খবরের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যদি ভারত কোনো পদক্ষেপ নেয়, সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক।
এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আঞ্চলিক রাজনীতির বিষয়ে এই ভূখণ্ডে ভারত ও আমেরিকার অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। তাই ভারত আমেরিকাকে কিছু বললে তারা তাদের স্বার্থে বলেছে।