রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৫ আগস্ট, ২০২৩ ১০:২৭ : পূর্বাহ্ণ
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহ পিরোজপুরে পৌঁছেছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৬ মিনিটে সাঈদীর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স সাঈদী ফাউন্ডেশনে পৌঁছায়।
মরদেহ পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে কান্নায় ভেঙে পড়েন ভক্ত ও সমর্থকরা। সাঈদীকে শেষবারের মতো একনজর দেখার জন্য মানুষের ঢল নামে। এসময় অনেককে আহাজারি করতে দেখা যায়।
আজ জোহরের নামাজের পর ঐতিহাসিক সাঈদী ফাউন্ডেশন মাঠে (পিরোজপুর নতুন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন) সাঈদীর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে বড় ছেলে রাফিক বিন সাঈদীর কবরের পাশে সাঈদীকে দাফন করা হবে।
এর আগে গতকাল সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু হয়।
বিএসএমএমইউ’র পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. রেজাউর রহমান বলেন, ‘উনার দুই বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। চিকিৎসকরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁচানো সম্ভব হয়নি।’
দীর্ঘ দিন ধরে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১-এ বন্দী ছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। সেখানে থাকা অবস্থায় ১৩ আগস্ট বিকেল পাঁচটার দিকে তিনি বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে কারাগারের অ্যাম্বুলেন্সে করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়।
হাসপাতালের বাইরে রণক্ষেত্র, সাউন্ড গ্রেনেড-টিয়ার শেল নিক্ষেপ
ভোর রাত তিনটার দিকে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহ হাসপাতাল থেকে এম্বুলেন্সে করে পুলিশ বের করতে চাইলে জামায়াত-শিবির কর্মীরা গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন এবং দাঁড়িয়ে যান। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা জামায়াত শিবির কর্মীদের প্রতিরোধের মুখে গাড়ির পাশ থেকে চলে যান।
ফজরের নামাজের পর অ্যাকশনে যায় পুলিশ। ভোর ৫টার কিছু পর হাসপাতালে বাইরে থেকে টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। এতে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে এদিক-ওদিক ছুটোছুটি করতে থাকে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে জামায়াত কর্মীরা।
একপর্যায়ে পুলিশের অ্যাকশনের মুখে পিছু হটে জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা। এসময় সাঈদীর মরদেহ বের করতে গেলে এম্বুলেন্সের চাকা পাংচার হয়ে যায়।
ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ সদস্যরা পাংচার হওয়া অ্যাম্বুলেন্সটি নিজেরা ঠেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ভেতর থেকে বাইরে নিয়ে আসেন। শাহবাগ মোড় পেরিয়ে বারডেম হাসপাতালের সামনে ঠেলে আনার পর অন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সে সাঈদীর মরদেহ তুলে দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে সেই অ্যাম্বুলেন্সটি পুলিশি নিরাপত্তায় পিরোজপুরের উদ্দেশে রওনা দেয়।