রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৩ জুলাই, ২০২৩ ২:০৭ : অপরাহ্ণ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা আমার ফোন ক্লোন করে তথ্য নিয়েছে। অন্যের ক্ষেত্রে হয়েছে কিনা জানি না। তবে এটা আমার স্বচক্ষে দেখা। একবার বিদেশে যাওয়ার সময় আমার টেলিফোন গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা জোর করে নিয়ে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর আবার ফেরত আসল এবং বললো, এটা খুলে দেন। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তারা ক্লোন করলো এবং সব তথ্য নিয়ে গেলো। বিষয়টা আজকে প্রকাশ্যেই বললাম আমি। এভাবে আমাদের ওপর অত্যাচার হয়, নির্যাতন হয় এবং এইটা আমার ওপরই।’
আজ রোববার সকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ইন্টারনেট শাটডাউনসহ সকল ধরনের ডিজিটাল-নির্যাতনের প্রতিবাদে বিএনপির মিডিয়া সেল এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত ১২ জুলাই এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ঐতিহাসিক সমাবেশ চলাকালে ওই এলাকার ইন্টারনেট সুবিধা বিচ্ছিন্ন/বিঘ্নিত করা হয়েছিল। অথচ সেদিন ওই সময়েই সরকারি দলের সমাবেশস্থলের ইন্টারনেট সংযোগ ছিল স্বাভাবিক। একাধিক সংবাদ মাধ্যমে এসংক্রান্ত খবরও প্রকাশিত হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে ইন্টারনেট শাটডাউনের এটিই প্রথম ঘটনা নয়। ইতিপূর্বে খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর, সিলেট, কুমিল্লা, রাজশাহী এবং ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশগুলোতেও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেশে ও প্রবাসে বসবাসকারী সকল নাগরিকদের তথ্য পাওয়ার অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমসহ আগ্রহী মহলকে করা হয়েছে বিচ্ছিন্ন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার বিদেশ থেকে নজরদারি প্রযুক্তি কিনে জনগণের ওপর তা প্রয়োগ করছে। ক্ষমতাসীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের ভয়ে ভীত হয়ে নতুন ডিজিটাল অস্ত্র ইন্টারনেট শাটডাউন করে সরকার মানুষের অধিকার হরণ করছে। তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার বাধাগ্রস্ত করে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি বা গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ করা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।’
অবিলম্বে গণবিরোধী ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আধুনিক রাষ্ট্রে মানুষের বাস্তব জীবনে যে অধিকার আছে, অনলাইনেও সেই একই অধিকার বলবৎ আছে। আজ অধিকাংশ মানুষ তার চিন্তা-ভাবনাকে অনলাইনের মাধ্যমেই প্রকাশ করে থাকেন। বাস্তব জীবনে মানুষের গোপনীয়তা রক্ষার যে অধিকার আছে অনলাইনেও সেই গোপনীয়তা রক্ষা করার অধিকার তার রয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আন্দোলন সংগ্রামের এই তথ্যসমূহের অবাধ প্রবাহকে ক্ষমতাসীন সরকার ভয় পায়। ইতিমধ্যেই সে কারণে অনির্বাচিত অবৈধ পার্লামেন্টে তারা তৈরি করেছে গণবিরোধী ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট। এই গণবিরোধী আইনের বলে ইতিমধ্যে শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী নয়, মুক্তমনা অনেক সাংবাদিক ও স্বাধীন নাগরিকরাও শিকার হয়েছেন মিথ্যা মামলার।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান এই জনবিচ্ছিন্ন, অত্যাচারী ফ্যাসিস্ট সরকার কথায় কথায় ডিজিটাল বাংলাদেশের কৃতিত্ব দাবি করে থাকে। কিন্তু আমরা যদি বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করে দেখি, তবে দেখা যাবে বাংলাদেশে ডিজিটাল সেবার অবস্থা কত শোচনীয়। বরং সাইবার জগতে মানুষের যেটুকু স্বাভাবিক অধিকার অবশিষ্ট আছে সেই অধিকারকেও কেড়ে নেওয়ার গভীর চক্রান্ত করছে এই আওয়ামী লীগ সরকার।’