বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আঞ্চলিক রাজনীতি

বরিশালে তারুণ্যের সমাবেশ লোকে লোকারণ্য

শেখ হাসিনার বিদায়ের জন্য সবাই অপেক্ষা করছে: ফখরুল


বরিশালে তারুণ্যের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিনিধি, বরিশাল প্রকাশের সময় :২৪ জুন, ২০২৩ ৭:৪২ : অপরাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও বিদায়ের জন্য সবাই অপেক্ষা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘সরকার সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রেখে নির্বাচন করে বলছে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে। আসলে দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে সরকার ১০টি আসনও পাবে না।’

আজ শনিবার বিকেলে বরিশাল নগরীর কীর্তনখোলা নদীর পাড়ে বেলসপার্ক মাঠে আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল এই সমাবেশের আয়োজন করে।

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোটাধিকার প্রয়োগ, ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার ও শিক্ষা উপকরণের দাম কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে সকাল থেকেই বরিশাল জেলা ও মহানগর, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা জেলা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বেলসপার্কে জড়ো হতে থাকেন। ছুটে আসেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও। দুপুরের মধ্যে কানায় কানায় ভর্তি হয়ে যায় মাঠ।

নেতা-কর্মীরা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার বৈধ নয়। এরা অবৈধ। তাদের অধীনে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আমাদের স্পষ্ট কথা আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবো না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা নির্বাচন চাই। সেটা হতে হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। আমাদের দফা এক দাবি এক শেখ হাসিনার পদত্যাগ। তবেই সাম্য ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকারের অন্যায়, দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে কিন্তু র‌্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য সুখকর নয়। কারণ এরা আমাদের ছেলেদের ধরে নিয়ে গুম করে রাখে। এজন্যই কি আমরা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলাম?’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জনগণের দাবি মেনে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই আওয়ামী লীগ ১৭৩ দিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছিল। অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চারটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। কোনো সমস্যা হয়নি। অথচ আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পরপরই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে। শুধু ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে। আজকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার মাধ্যমে দেশে সংকটকে দীর্ঘ করেছে সরকার।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে ফ্যাসিবাদের (সরকার) বিরুদ্ধে আমাদের নতুন সংগ্রাম হয়েছে। এরা আমাদের ইলিয়াস আলী, সুমন, থেকে শুরু করে ৬ শতাধিক নেতা-কর্মী গুম করেছে। তাদের সন্তানরা এখনো অপেক্ষা করে তাদের বাবা-ভাই ফিরে আসবে। কিন্তু এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের সন্তানদের পিতৃহারা, স্ত্রীদের স্বামীহারা এবং মায়েদের সন্তানহারা করেছে। শুধু অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রাখতে গত ১৪ বছর ধরে নির্যাতন করছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে সরকার বিদ্যুতের কথা বলে। কিন্তু বিদ্যুৎ নেই। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে প্রকল্প করে টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করা। আজকে সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। কিন্তু সরকার আরাম আয়েশ করছে। এরা কাগজ কলম সবকিছুর দাম বাড়িয়েছে। এরা যতদিন পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে এই অবস্থা চলতে থাকবে।’

ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি মনিরুল ইসলাম খান ফারুক, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক, ছাত্রদলের সহসভাপতি তানজিল হাসান, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর