রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২১ জুন, ২০২৩ ২:১৭ : অপরাহ্ণ
সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিক্রি কিংবা লিজ দিয়ে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বুধবার দুপুরে গণভবনে কাতার ও সুইজারল্যান্ড সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা। কারও কাছে এ দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিলে আমিও ক্ষমতায় (২০০১ সালে) থাকতে পারতাম।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতিকে রেজিম চেঞ্জের কৌশল (ক্ষমতা বদল) মন্তব্য করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সংসদে বলেন, ‘তারা সেন্টমার্টিন চায়, কোয়াডে (যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতের জোট) বাংলাদেশকে চায়। বর্তমান সরকারকে হটানোর লক্ষ্যে তারা সবকিছু করছে।’
প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘এখন যদি বলি সেন্টমার্টিন দ্বীপ কারও কাছে লিজ দেবো, তাহলে ক্ষমতা থাকার কোনো অসুবিধা নেই। আমার দ্বারা এটা হবে না। আমার দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে খেলতে দেবো না।’
বিএনপিকে উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা এ গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। এখন তারা দেশ বিক্রি করবে। তারা নাকি সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিক্রির মুচলেকা দিয়ে আসতে চায়।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমার দেশের মাটি ব্যবহার করে কোনো জায়গায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে, কাউকে আক্রমণ করবে বা এ ধরনের কাজ আমরা হতে দেব না। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা শান্তিপূর্ণ সহযোগিতায় বিশ্বাস করি।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা বিষয় ভুলভাবে পত্রিকায় এসেছে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ভারত যথেষ্ট পরিপক্ক, (যুক্তরাষ্ট্রের কাছে) তাদের কী বলতে হবে, তারা জানে। সেজন্য আমাদের ওকালতির দরকার নেই। ভারতের ওকালতি আমরা চাই না-এটা বলেননি। তিনি যা বলেছেন আর যা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, এর মধ্যে বিরাট ফাঁক আছে।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ভারতের সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ
আগামী জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বরের আগে না পরে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কী এমন পরিস্থিতি হয়েছে যে আপনাদের আশঙ্কা হচ্ছে। সংবিধান আছে, নির্বাচন কমিশন আছে, তারা যখন ঘোষণা দেবে, তখন নির্বাচন হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য হলো যে, যারা ভোট চোর বলে, তারা তো ভোট ডাকাত। ডাকাতি করে যাদের উত্থান, যারা খুন করে মানুষ হত্যা করে, তারা এখন গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলে।’
পাঁচটি দেশের (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা) অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসে বাংলাদেশের যোগ দেওয়ার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের কারণ জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একক নির্ভরশীলতা কমাতে আমরা ব্রিকসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেশের জন্য যেটা ভালো সেটাই করবো।’
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন চার দিনের সফরে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৪ ও ১৫ জুন অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড অফ ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’-এ যোগদান শেষে ১৭ জুন দেশে ফেরেন তিনি।