রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৮ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা আঞ্চলিক রাজনীতি

‘ছাত্রদল নেতাকে ফাঁসাতে পুলিশ অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজিয়েছে’

বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুরে বিএনপি নেতা-কর্মীদের জড়িত থাকার প্রমাণ চাইলেন ডা. শাহাদাত


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :১৭ জুন, ২০২৩ ৭:৩১ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন।
Rajnitisangbad Facebook Page

চট্টগ্রাম নগরীর জামালখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপির কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন দলটির চট্টগ্রাম মহানগর শাখার আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন।

এই বিএনপি নেতা পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘ম্যুরাল ভাঙচুরে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা যে ওই ঘটনার সাথে জড়িত, এমন কোনো ভিডিও ফুটেজ কি পুলিশ দেখাতে পারবে? যদি পুলিশ প্রমাণ করতে পারে, তাহলে আমরা সব দায় স্বীকার করে নেবো।’

আজ শনিবার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়ি নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা-গ্রেফতারসহ সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে নগর বিএনপি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ জুন নগরীর কাজীর দেউড়ির মোড়ে বিএনপির ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাবেশে মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে যুবদল-ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় জামালখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ অন্তত ৫০টি চিত্রকর্ম ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

ম্যুরাল ভাঙচুরের দিনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘১৪ জুন কাজীর দেউড়ি মোড়ে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশ করার কথা ছিল ১১ জুন। কিন্তু যুবলীগ একইদিন পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করায় আমরা সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য আমাদের কর্মসূচি পিছিয়ে দিই। এরপরও যুবলীগ আমাদের সমাবেশের দিন শান্তি সমাবেশের নামে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ করেছে। ওইদিন বিএনপির সমাবেশে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আসার পথে চট্টগ্রাম কলেজের সামনে ও জামালখান মোড়ে হামলা চালিয়ে নেতা-কর্মীদের আহত করে। পরে উল্টো বিএনপির পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মীর নামে কোতোয়ালী ও চকবাজার থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়।’

নগর বিএনপির এই আহ্বায়ক অভিযোগ করে বলেন, ‘ম্যুরাল ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে বিএনপির নিরপরাধ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘গায়েবি মামলা’ দায়েরের পাশাপাশি পুলিশ চট্টগ্রামে গণগ্রেফতার শুরু করেছে।’

চকবাজার থানার মামলায় ইউসুফ নামে ‘নিরপরাধ’ একজনকে আসামি করার তথ্য তুলে ধরে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘তারুণ্যের সমাবেশ হয়েছে ১৪ জুন। আর চকবাজার থানায় ছাত্রলীগ কর্মীর করা মামলায় ৪৫ নম্বরে যাকে আসামি করা হয়েছে, মো. ইউসুফ, তিনি তখন ভারতের চেন্নাইয়ে ছিলেন। তিনি ঢাকায় এসেছেন ১৫ জুন। মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে।’

এই বিএনপি নেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘শামীম ও জাহাঙ্গীর নামের দুইজন সাবেক ছাত্রদল নেতাকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমি চকবাজার থানায় গিয়ে তাদের দেখে এসেছি। তাদের সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন। যদি মামলার আসামি হয়ও তাহলে মারার অধিকার পুলিশকে কে দিয়েছে? পুলিশ গ্রেফতার করতে পারবে, গায়ে হাত তোলার অধিকার কেউ দেয়নি। এসব পুলিশ কর্মকর্তাদের তালিকা করা হচ্ছে।’

ডা. শাহাদাত হোসেন আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘গত বুধবার (১৪ জুন) রাতে চাঁন্দগাওয়ের বাসা থেকে গ্রেফতার করা সাবেক ছাত্রদল নেতা নওশাদকে ফাঁসানোর জন্য এনায়েত বাজারের গোয়াল পাড়া থেকে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজিয়েছে পুলিশ।’

এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার ও প্রশাসন এসব গায়েবি মামলা করছে। অনৈতিকভাবে এসব মামলা করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঘরছাড়া, মাঠছাড়া করতে চায় সরকার। ঠিক যেভাবে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আমাদের ৫৫ জন সংসদ সদস্য প্রার্থীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছিল।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, নগর কমিটির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলার আহবায়ক আবু সুফিয়ান, নগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এম এ আজিজ, মো. মিয়া ভোলা, আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, নাজিমুর রহমান ও শফিকুর রহমান স্বপন,নগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু এবং নগর ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর