রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৪ মে, ২০২৩ ১২:৩১ : পূর্বাহ্ণ
আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষকদের ধারণাই সত্যি হলো। শেষ পর্যন্ত সুপারসাইক্লোনে পরিণত হলো মোখা। শনিবার রাত ৯টায় অতি প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়টি সুপারসাইক্লোনে রূপ নিয়েছে বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার।
মার্কিন ন্যাভাল ওশানোলজি পোর্টালের বরাতে ফেসবুকের এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ।
২০০৭ সালের সিডর ছিল একটি সুপার সাইক্লোন। ওই ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের বেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ২৬০ কিলোমিটার।
ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ যদি ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে, তাহলে সেটিকে স্বাভাবিক ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটারের মধ্যে হলে সেটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আর বাতাসের গতিবেগ ১১৮ থেকে ২২০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে সেটিকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
শনিবার রাতে এক ফেসবুকে পোস্টে আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, বাংলাদেশ সময় শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিবেগ পাওয়া গেছে ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার; দমকা হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ২৯৬ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়টির চলার গতিবেগ গত দুই দিনের গতিবেগ অপেক্ষা দ্বিগুণ হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টায় ঘূর্ণিঝড়ের চলার গতিবেগ পাওয়া গেছে ঘণ্টায় ২২ কিলোমিটার।
মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, রাত ৩টা থেকে ভোর ৬টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রবর্তী অংশ সেনমার্টিন দ্বীপে আঘাত হানতে শুরু করবে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশই কক্সবাজার জেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করতে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
জয়েন্ট তাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের গ্রাফ তথ্য বলছে, রোববার প্রথম প্রহরেই মোখার অগ্রভাগ উপকূলের কাছে পৌঁছে যাবে। সে সময় ঝড়ের ধাক্কা শুরু হবে, প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর পুরো ঝড় উপকূলে উঠে না যাওয়া পর্যন্ত চলবে। উপকূলে আঘাত হানার ঠিক আগেও বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায়ও ঝড়ে বাতাসের তীব্রতা থাকবে ২১২ কিলোমিটারের বেশি।
২০০৭ সালে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হেনেছিল ঘূর্ণিঝড় সিডর। তাতে অন্তত সাড়ে ৩ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন। তারপর আরও অনেক ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের মানুষ দেখলেও তত ক্ষতি আর হয়নি।
এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, এটি (মোখা) সিডরের মতোই শক্তিশালী। প্রায় সিডরের সমতুল্য গতিবেগ নিয়ে সে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। তবে পার্থক্য হলো সিডর বাংলাদেশের মাঝ বরাবর দিয়ে গিয়েছিল, মোখা পাশ দিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভয়ংকর সেই সিডরের মতোই শক্তিশালী ‘মোখা’