শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আন্তর্জাতিক

রাতের আঁধারে আল-আকসায় ইসরায়েলি পুলিশের সহিংস অভিযান


আল-আকসা মসজিদে সহিংস অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৫ এপ্রিল, ২০২৩ ২:১৬ : অপরাহ্ণ

পবিত্র রমজানের মধ্যে অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদে সহিংস অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। এ সময়
মসজিদ প্রাঙ্গণে ইবাদতরত কয়েক ডজন মুসল্লির ওপর হামলা চালানো হয়।

রাতের আধাঁরে হওয়া এই হামলায় ১২ জন আহত হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। আটক করা হয়েছে অন্তত ৪০০ ফিলিস্তিনিকে।

স্থানীয় সময় আজ বুধবার ভোরবেলা এই অভিযান চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, জেরুজালেমের পবিত্র আল আকসা মসজিদ ও এর প্রাঙ্গণে ইবাদতরত কয়েক ডজন মুসল্লির ওপর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। রাতের আধাঁরে হওয়া এই হামলায় সাতজন আহত হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানান, অন্তত ৪০০ ফিলিস্তিনিকে আটক করা হয়েছে। অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আতারোতের একটি থানায় তারা ইসরায়েলি হেফাজতে আটক রয়েছে।

ফিলিস্তিনি প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী স্টান গ্রেনেড এবং টিয়ার গ্যাসসহ ব্যবহার করেছে। এতে মুসল্লিদের দম নিতে সমস্যা হয়। লাঠিসোঁটা ও রাইফেল দিয়ে তাদেরকে পিটিয়েছে পুলিশ।

আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন এক বয়স্ক নারী। পরে মসজিদের বাইরে বসে তিনি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বয়স্ক ওই নারী বলেন, ‘আমি একটি চেয়ারে বসে (কোরআন) তেলাওয়াত করছিলাম। একপর্যায়ে তারা (ইসরায়েলি পুলিশ) স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। ওই গ্রেনেডের মধ্যে একটি আমার বুকে আঘাত করেছে।’

এসময় তিনি কাঁদতে শুরু করেন।

ইসরায়েলি পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘মুখোশধারী আন্দোলনকারীরা’ আতশবাজি, লাঠি এবং পাথর নিয়ে মসজিদের ভেতরে অবস্থান নেওয়ায় তারা জোর করে মসজিদ কম্পাউন্ডে প্রবেশ করতে বাধ্য হয়েছিল।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘মসজিদ প্রাঙ্গণে পুলিশ প্রবেশ করার পর তাদের দিকে পাথর ছুড়ে মারা হয় এবং মসজিদের ভেতর থেকে আতশবাজি নিক্ষেপ করা হয়। এতে একজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।’

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরে কয়েক মাস ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এছাড়া মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাস এবং ইহুদি পাসওভারের (ইহুদিদের বাৎসরিক ইভেন্ট) মতো গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব একসঙ্গে হওয়ায় আরও সহিংসতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এদিকে পবিত্র আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর হামলার সর্বশেষ এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি দলগুলো। এছাড়া হামলার ঘটনাকে তারা অপরাধ হিসেবেও বর্ণনা করেছে।

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনেহ বলেছেন, ‘আমরা পবিত্র স্থানগুলোতে রেড লাইন অতিক্রম করার বিরুদ্ধে দখলদার ইসরায়েলকে সতর্ক করছি। এই ধরনের ঘটনা ব্যাপকভাবে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটাবে।’

অন্যদিকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন দল হামাস সর্বশেষ এই অভিযানকে ‘অভূতপূর্ব অপরাধ’ বলে নিন্দা করেছে। একইসঙ্গে পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের ‘আল-আকসা মসজিদে ব্যাপকভাবে যাওয়ার’ আহ্বানও জানিয়েছে দলটি।

এদিকে পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর ইসরায়েলি পুলিশের হামলার এই ঘটনাটি অধিকৃত পশ্চিম তীরজুড়ে বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। একইসঙ্গে এই ঘটনার জেরে গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে নয়টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে নয়টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। যার মধ্যে অন্তত চারটি ধ্বংস করা হয়েছে এবং আরও চারটি খোলা জায়গায় পড়েছে।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর