রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩১ মার্চ, ২০২৩ ১০:১৬ : অপরাহ্ণ
বাংলাদেশকে অবিলম্বে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক।
আজ শুক্রবার তার কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানান।
ভলকার তুর্ক বলেন, আমি উদ্বিগ্ন যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি বাংলাদেশে সাংবাদিক ও মানবাধিকার রক্ষাকারীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি ও ভয় দেখানো এবং অনলাইনে সমালোচনামূলক কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি অবিলম্বে এই আইনের ব্যবহার স্থগিত করার আহ্বান জানাই।
পাশাপাশি তিনি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করার জন্য এই আইনের বিধানগুলিকে ব্যাপকভাবে সংস্কারের আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান বলেন, আমার অফিস ইতিমধ্যে এই আইন সংশোধনে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশকে বিস্তারিত প্রযুক্তিগত ধারণা প্রদান করেছে।
২০১৮ সালের ১ অক্টোবর কার্যকর হওয়া এই আইনের অধীনে দুই হাজারেরও বেশি মামলা দায়ের হয়েছে। সর্বশেষ ২৯ মার্চ দৈনিক প্রথম আলোতে কর্মরত সাংবাদিক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে এ আইনে মামলা হয়। তাকে তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে আটক করা হয় এবং তার ল্যাপটপ, ফোন ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এরপর তার জামিনের আবেদনও খারিজ হয়ে যায়। প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও এক আলোকচিত্রীর বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।
বাংলাদেশে জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকট নিয়ে তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই এই মামলা দায়ের হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় ওই বিবৃতিতে ।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ফেসবুকে একটি পোস্টে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে পরিতোষ সরকার নামে এক যুবককে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল।
ভলকার তুর্ক বিবৃতিতে বলেন, আমার অফিস ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অত্যধিক বিস্তৃত এবং অসংজ্ঞায়িত বিধানগুলো সম্পর্কে ক্রমাগত উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, আইনের স্বেচ্ছাচারী বা অত্যধিক প্রয়োগ রুখতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু এখনও যেভাবে গ্রেপ্তার অব্যাহত আছে, তাতে শুধু এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। এই গোটা আইনটিরই সংশোধন প্রয়োজন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে অমীমাংসিত সকল মামলা পর্যালোচনার জন্য একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় প্যানেল গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন ভলকার তুর্ক।
এছাড়া মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের আদিলুর রহমান খান এবং নাসিরুদ্দিন এলানের চলমান বিচারকার্য নিয়েও উদ্বেগ জানান তিনি। ২০১৩ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে মিথ্যা রিপোর্ট করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।