রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৩ মার্চ, ২০২৩ ৯:০৩ : অপরাহ্ণ
নির্বাচন কমিশনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করে গড়ে তোলা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলে ভোট চুরির সুযোগ নেই।’
আজ সোমবার বিকেলে গণভবনে কাতার সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দিবে; এটা তো আমাদেরই স্লোগান। জনগণের ভোট যাকে খুশি তাকে দিবে। আমাদের যে আন্দোলন আগাগোড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য করেছি। জনগণের ভাতের অধিকার এবং ভোটের অধিকারের আন্দোলনও কিন্তু আমাদের করা। সেটা কিন্তু আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।’
ইভিএম নিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম নির্বাচনটা ডিজিলাট পদ্ধতিতে হোক। কিন্তু অনেকেই তা চায় না। কিছু কিছু মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের বিরোধিতা করছে। এখন এটা নির্বাচন কমিশনের বিষয়। নির্বাচন কমিশন যতোটুকু পারে ততোটুকু করবে।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘যারা নির্বাচনে অংশ নেবে তারা নেবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য যা যা করার প্রয়োজন ছিলো তা সব করে দিয়েছি।’
আগামী নির্বাচন ঘিরে আন্তর্জাতিক কোনো চাপ আছে কি না-এক সাংবাদিকের এই প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এমন কোনো চাপ নেই যা শেখ হাসিনাকে দিতে (টলাতে) পারে। এটা মাথায় রাখতে হবে। কারণ আমার সাহস একমাত্র আমার জনগণ। আর আমার আল্লাহ আছে এবং আমার বাবা-মার আশীর্বাদ ও দোয়া আছে। কে কী চাপ দিলো, না দিলো এটাতে কিছু আসে যায় না। আমি আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পাই না। জনগণের স্বার্থে কাজ করি। জনগণ যা বলবে আমি তাই করব। বিদেশি চাপ আমাকে কিছুই করতে পারবে না। জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের কল্যাণে যা করার দরকার আমরা তাই করবো।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘যারা অভিযোগ করছে করুক। বিদেশি দূতাবাসে যাচ্ছে, বিদেশি কূটনীতিকদের ডেকে এনে বৈঠক করছে, বহির্বিশ্বে চিঠি পাঠাচ্ছে। এতে আমার কিছু যায় আসে না।’
আগামী জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে বিএনপির সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে কিনা-এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাদের সঙ্গ সংলাপ করবো, যারা আমার বাবা-মার হত্যাকারী এবং আইভি রহমানের হত্যাকারী। আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। তারপরও তাদেরকে সহ্য করে করেছি। এমনকি খালেদা জিয়ার ছেলে যখন মারা গেল তখন তার বাড়ি গিয়েছিলাম। কিন্তু কী করেছে, আমাকে তার বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি। বাড়ির দরজার বন্ধ করে দিয়েছিল। আমি বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তারপর তাদের অনেক কিছু সহ্য করেছি। তাদের সঙ্গে কীসের সংলাপ। কেউ পারত যার বাবা-মাকে হত্যা করেছে তাদের সঙ্গে সংলাপ করতে। যারা এতোটুক ভদ্রতা জানে না তাদের সঙ্গে কীসের সংলাপ। যতটুকু সহ্য করেছি ততটুকু দেশের স্বার্থে, নিজের স্বার্থে নয়।’
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘যে দল বেশি লাফায় সে দলের দুই নেতাই হচ্ছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা না পারবে ইলেকশন করতে, না পারবে ক্ষমতায় আসতে। বিএনপি নিজের গঠনতন্ত্র নিজেরা ভঙ্গ করছে। কারণ, তাদের গঠনতন্ত্রে আছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি দলের নেতা হতে পারে না। এখন সেই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকেই দলের নেতা বানিয়ে রেখে দিয়েছে। এখন এই দলের কাছে কী আশা করবেন।’
আসন্ন নির্বাচন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামের মানুষ এখন ভালো আছে। তারা বলছে, এই সরকার থাকলেই ভাল। কিন্তু নির্বাচনে মানুষ ভোট দিলে আছি না দিলে নাই। এটি জনগণের ওপর নির্ভর করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অনেকগুলো এজেন্সি মুখিয়ে আছে। নির্বাচন যাতে অবাধ সুষ্ঠু হয় সেই উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। বিদ্যমান ব্যবস্থায় যে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হতে পারে তা আমরা প্রমাণ করেছি। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে দিতে পেরেছি।’
নব নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি কিন্তু পোড় খাওয়া মানুষ। ১৫ই আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিবাদ করে জেল খেটেছেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার সততা আছে। ব্যক্তিত্ব আছে। তিনি অবশ্যই একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের চেষ্টা করবেন।’
আরও পড়ুন:
ববির রাজনীতিতে আসার গুঞ্জন নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী
৪০ জনের নাম ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন দিতে হলো কেন, ড. ইউনূস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী