দাম নিয়ে বিতর্কের মধ্যে ভারতের গোড্ডা কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে যে কোনো সময় বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু করতে পারে আদানি পাওয়ার।
গত বুধবার রাতে পরীক্ষামূলকভাবে আদানির গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা হয়। সে সময় ৭৪৬ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গেছে।
আদানির বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেশি হওয়া নিয়ে শুরু হয় বির্তক। এর মধ্যেই আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরুর তোড়জোড় হয়। কেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবার কথা ছিল ২৬ মার্চ।
আদানি পাওয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ইউসুফ শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা গতকাল (বুধবার) থেকে প্রস্তুত রয়েছি। এখন বাংলাদেশ প্রান্ত সুইচ অন করলেই আমরা বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু করতে পারবো।’
তবে কখন থেকে সঞ্চালন শুরু হবে সে সম্পর্কে তিনি নির্দিষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি) সূত্র বলছে, আদানির বিদ্যুৎ সঞ্চালন করার জন্য ভারত এবং বাংলাদেশ প্রান্তে যে গ্রিড লাইন রয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অংশের কাজ শেষ করেছে পিজিসিবি।
আজ বৃহস্পতিবার পিজিসিবির তরফ থেকে পিডিবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে লাইনটি বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রস্তত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সঞ্চালন লাইন প্রস্তুত থাকার বিষয়টি অনানুষ্ঠানিকভাবে আদানিকেও জানানো হয়েছে।
পিজিসিবির মুখপাত্র এবিএম বদরুদ্দোজা সুমন বলেন, ‘আমরা আমাদের সিস্টেম রেডি করে ইতোমধ্যে বলে দিয়েছি। এর পরের কাজ পিডিবি এবং আদানি করবে। আমাদের হাতে আর কিছু নেই।’
কেন্দ্রটি ভারতের ঝাড়খন্ডের গোড্ডা জেলায়। সেখান থেকে সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ আসবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহানপুরে, সেখান থেকে যাবে বগুড়ায়।
ঝাড়খন্ডের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে সঞ্চালনের জন্য মোট ২৪৪ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়। এরমধ্যে ভারতে ১০৮ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশে ১৩৬ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন রয়েছে।
আদানির কেন্দ্রটি দুটি ইউনিটে মোট এক হাজার ৪৯৮ মেগাওয়াটের। এর মধ্যে ৭৫০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র চালু হবার পথে। দ্বিতীয় কেন্দ্রটি পরে আসবে।
বাণিজ্যকভাবে চালু হবার পর ৭২ ঘন্টা একনাগাড়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু রাখতে হবে। এরপরে ঠিক হবে কেন্দ্রটির স্থাপিত ক্ষমতা। সে অনুযায়ী কেন্দ্রটি ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পাবে।
গতমাসে দেয়া প্রতি টন কয়লার দাম ৪০০ ডলার অনুযায়ী প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়বে ২৫ টাকার বেশি। এর মধ্যে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া রয়েছে ৫ টাকা ১১ পয়সা।
বাংলাদেশে কোনো বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে এতো অধিক পরিমান কেন্দ্র ভাড়া দেয়া হয়নি। এ ছাড়া আদানিকে কয়লার সিস্টেম লস সহ বেশ কিছু সুবিধা দেয়া হয়েছে যা আর কাউকে দেয়া হয়নি।