বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আঞ্চলিক রাজনীতি

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ

৭ নেতার ‘মিশন’ ফেল, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মাহতাব-নাছিরও সাক্ষাৎ করলেন


ঢাকায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১১:৫১ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের একটি পক্ষের সাত নেতার ‘মিশন’ ফেল হয়েছে। ওই সাত নেতা সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে না জানিয়ে গোপনে ঢাকায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান।

কিন্তু গোপন খবর থাকেনি গোপন! খবর পেয়ে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন ১০ নেতাকে সঙ্গে নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ওই সাত নেতার সঙ্গে আলাদাভাবে সাক্ষাৎ করেননি। তিনি সবাইকে একসঙ্গে ডেকে নেন।

আজ রোববার দুপুর দেড়টার দিকে গণভবনে প্রথমে ঢুকেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন ও যুগ্ম সম্পাদক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর নেতৃত্বে এক পক্ষের সাত নেতারা। এরপর মাহতাব-নাছিরের নেতৃত্বে অপর পক্ষের নেতারা প্রবেশ করেন।

খোরশেদ আলম সুজন ও রেজাউল করিম চৌধুরীর নেতৃত্বে যারা ছিলেন তারা হলেন-নগর আওয়ামী লীগের তিন সহসভাপতি জহিরুল আলম দোভাষ, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সম্পাদক বদিউল আলম ও কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম।

মাহতাব-নাছিরের নেতৃত্বে যারা ছিলেন তারা হলেন-নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য সফর আলী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা বেলাল আহমদ, ড. নিছার উদ্দীন মঞ্জু, বিজয় কিষাণ চৌধুরী, জাফর আলম চৌধুরী, আবদুল লতিফ টিপু ও সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই সাক্ষাতে অংশ নেওয়া নগর আওয়ামী লীগের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজনীতি সংবাদকে জানান, গণভবনে মাহতাব-নাছির ও তাদের সঙ্গীদের দেখে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যান অপর পক্ষের নেতারা। মাহতাব ও নাছিরের বিরুদ্ধে নালিশ করতে অপর পক্ষের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গোপনে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের এই গোপন মিশন ভেস্তে যায়।

নগর আওয়ামী লীগের ওই নেতা জানান, এরপরও মাহতাব-নাছিরের সামনে খোরশেদ আলম সুজন ও বদিউল আলম প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাংগঠনিক নানা বিষয় নিয়ে নালিশ দেন। তারা নগর আওয়ামী লীগে স্থবিরতা বিরাজ করছে বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানান।

এ সময় আ জ ম নাছির প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসব অভিযোগের জবাব দেন।

সংগঠনের সাম্প্রতিক চিত্র তুলে ধরে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, আমাদের ১৩২টা ইউনিটের মধ্যে ১২০টিতে সম্মেলন শেষ করেছি। ৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫টির সম্মেলন সম্পন্ন করেছি। বাকি ওয়ার্ড-ইউনিটগুলোতে কিছু নেতার বিরোধিতা ও অসহযোগিতার কারণে সম্মেলন করতে পারিনি। আমরা সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য প্রতিটা ইউনিটে সদস্য সংগ্রহ করছি। বিএনপি-জামাতের নৈরাজ্য প্রতিহত করতেও আমরা রাজপথে সক্রিয় আছি।

এরপর আ জ ম নাছির বাকি ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে সম্মেলন সম্পন্ন করতে আওয়ামী লীগ সভাপতির পরামর্শ চান। এ সময় শেখ হাসিনা আগে তৃণমূলে সম্মেলন শেষ করতে নির্দেশনা দেন।

দুপুর দেড়টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত প্রায় দুই ঘন্টা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, নগর আওয়ামী লীগে এই দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে তলে তলে বিরোধ চলে আসছে।

২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের নগরীর ফিরিঙ্গী বাজারের বাসায় বৈঠক করেছিলেন নগর আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ও নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, যুগ্ম সম্পাদক ও সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ ও সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম এবং বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম নগর আ.লীগের সম্মেলন না হওয়া নিয়ে মুখ খুললেন স্বপন

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর