রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ৭:৫১ : অপরাহ্ণ
চলতি বছরেই সরকারি চাকরিজীবীদের বাইরে দেশের সব প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিককে পেনশন-ব্যবস্থার পরীক্ষামূলক কার্যক্রম করতে চায় সরকার। এ জন্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী ‘জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ’ প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার।
আজ সোমবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দেশের সর্বস্তরের জনগণকে টেকসই পেনশন কাঠামোয় অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে প্রণীত ‘সবজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩’ এর ৪(১) ধারা অনুযায়ী ‘জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ’ প্রতিষ্ঠা করা হলো।
এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এরপর আইনের ৬ ধারা অনুযায়ী শিগগির কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। তখন জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয় থেকে কর্তৃপক্ষের একজন নির্বাহী চেয়ারম্যানসহ চারজন সদস্য নিয়োগ দেওয়া হবে।
গত ২৪ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে বহুল আলোচিত ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ পাস হয়। এরপর ৩১ জানুয়ারি পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩ নামের আইনটি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করে জাতীয় সংসদ।
আরও পড়ুন: সংসদে বিল পাস, সব নাগরিকের জন্য পেনশন
এর ১৪ ধারার ১ উপধারায় বলা হয়, জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরে সর্বজনীন পেনশনের আওতায় ১৮ বছর বা তার বেশি বয়স থেকে ৫০ বছর বয়সী সব নাগরিক অংশ নিতে পারবেন। বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদেরও পেনশন স্কিমের আওতায় রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
তবে মাসিক পেনশন-সুবিধা পেতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর চাঁদাদাতাকে ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে।
এতে বলা হয়, চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জীভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন পাবেন। একজন পেনশনার আজীবন পেনশন-সুবিধা পাবেন।
পেনশনে থাকাকালীন কোনো ব্যক্তি ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে তার নমিনি অবশিষ্ট সময়ের জন্য (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন।
চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে মারা গেলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরাও এতে অংশ নিতে পারবেন।
চাঁদার হার কত হবে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। এ আইনের আওতায় গঠিত সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ এটি নির্ধারণ করবে। মাসিক বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে চাঁদা দেওয়া যাবে এবং অগ্রিম ও কিস্তিতেও চাঁদা দেওয়ার সুযোগ থাকবে।
সরকার গেজেট জারি করে বাধ্যতামূলক না করা পর্যন্ত এই পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ হবে ঐচ্ছিক।
পেনশন তহবিলে জমা দেওয়া অর্থ কোনো পর্যায়ে এককালীন তোলার প্রয়োজন পড়লে চাঁদাদাতা আবেদন করলে জমা দেওয়া অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে তুলতে পারবেন। যা পরবর্তীতে ফিসহ পরিশোধ করতে হবে।
পেনশন থেকে পাওয়া অর্থ আয়করমুক্ত থাকবে। পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে।