বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সরকারকে ‘স্বৈরাচার’ আখ্যায়িত করে বলেছেন, ‘স্বৈরাচার কখনো আপসে ক্ষমতা ছাড়ে না, তাদেরকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করতে হবে।’
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই সমাবেশের আয়োজন করে ছাত্রদল।
সরকারের দমনপীড়নের কঠোর সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সরকার যতোই নির্যাতন করুক, নেতাকর্মীদের কারাবন্দি করুক-কোনো লাভ হবে না। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করেছে, এক হাজারের ওপরে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, ৩৭ লাখের বেশি নেতাকর্মীর নামে মামলা দিয়েছে। কিন্তু আমাদের আন্দোলন থামেনি। তাই সরকারকে বলতে চাই, এতোকিছু করেও আন্দোলনকে দমাতে পারেননি। জনগণ নেমে গেছে রাস্তায়। আপনাদের আর রেহাই নেই।’
সরকার পতনের আন্দোলনে ছাত্রসমাজকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আগামী দিনে আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ ১০ দফা বাস্তবায়ন, নেতা-কর্মীদের মুক্ত করা। এটা করতে হলে যত দ্রুত সম্ভব এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। এই সরকারকে বিদায় করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সে জন্য অতীতের ধারাবাহিকতায় ছাত্রসমাজকেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। ছাত্র-জনতা-যুব সমাজের ঐক্যবদ্ধভাবে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।’
‘জনগণ সরকার চায় না বলে বার্তা দিয়েছে’-এমন দাবি করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘অন্ধকার কেটে যাবে। আলো আসবে। ছাত্রসমাজ, জনগণ, বিএনপি, গণতান্ত্রিক-দেশপ্রেমিক শক্তি- যারা যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছে তারা আলো দেখানোর জন্য ইতিহাস সৃষ্টি করবে।’
লাল-সবুজ টুপি, জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই সমাবেশে অংশ নেন। সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।
ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের সঞ্চালনায় সমাবেশে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আমান উল্লাহ আমান, নাজিম উদ্দিন আলম, আজিজুল বারী হেলাল, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান, ইকবাল হোসেন শ্যামল, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস প্রমুখ বক্তব্য দেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান শিক্ষা, ঐক্য ও প্রগতি-এই তিন মূলনীতিকে ধারণ করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গঠন করেন।
