রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ১২:০৯ : অপরাহ্ণ
চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আবারও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এবার ছড়াচ্ছে ওমিক্রনের নতুন উপধরন ‘বিএফ.৭’।
নতুন এ ধরনটি অতি সংক্রামক এবং এটি শনাক্ত করা কঠিন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, চীনে নতুন করে ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে ভারতসহ বাংলাদেশেও সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ অবস্থায় করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউ মোকাবিলায় সরকারের কোভিড বিষয়ক জাতীয় কারিগরি কমিটি ৪ দফা সুপারিশ জানিয়েছে।
আজ রোববার সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত ‘বিশ্বে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে বাংলাদেশের করণীয়’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সভায় এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির।
তিনি বলেন, ‘চীন-ভারতসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে আবারও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু রয়েছে৷ অসংখ্য মানুষ প্রতিনিয়ত যাওয়া-আসা করছে। এ অবস্থায় করণীয় ঠিক করতে গতকাল শনিবার জাতীয় কারিগরি কমিটির বৈঠক ছিল। কমিটি চারটি বিষয়ে আমাদের পরামর্শ দিয়েছে।’
আহমেদুল কবির বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের নতুন ধরনের সবচেয়ে ভয়াবহ দিক হলো-টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য এটির ভয়াবহতা অনেক বেশি। তাই যারা টিকা নেয়নি, তাদের দ্রুত নিয়ে নেওয়ার জন্য কারিগরি কমিটি সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া সেকেন্ড বুস্টার ডোজের (চতুর্থ ডোজ) প্রচার বাড়ানোর বিষয়েও বলেছে কমিটি। সম্মুখসারির কর্মী, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও ষাটোর্ধ্ব যারা রয়েছেন, তাদের দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, মাস্ক ব্যবহার করা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করা এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকার বিষয়ে কারিগরি কমিটি থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আহমেদুল কবির বলেন, ‘কারিগরি কমিটির সভায় তৃতীয় যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা হলো-বিমানবন্দর, স্থলবন্দরসহ সব বন্দরগুলোতে পরীক্ষা জোরদার করা। রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক এরইমধ্যে বিভিন্ন বন্দরগুলোতে চিঠি দিয়েছেন। বিমানবন্দর, স্থলবন্দর থেকে শুরু করে সব জায়গায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের অ্যান্টিজেন টেস্ট করে আইসোলেট করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া যেসব দেশে করোনা শনাক্ত করা হচ্ছে, সেসব দেশ থেকে যারা আসবেন, তাদের মধ্যে উপসর্গ থাকলে দ্রুত পরীক্ষার আওতায় এনে যেকোনোভাবে এটিকে মোকাবিলা করার কথা বলা হয়েছে, যাতে নতুন ধরনটি দেশে ঢুকতে না পারে।
অনুষ্ঠানে কারিগরি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, ‘কোভিড সংক্রমণের নতুন ধরন নিয়ে আমাদের সতর্ক হতে হবে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। মানুষের মধ্যে সতর্কতা নেই বললেই চলে।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ একদম স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে ভুলে গেছে। যেহেতু সংক্রমণ বাড়ছে, আবারও পাবলিক প্লেসে মাস্ক পরা, দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। আবারও সচেতনতা বাড়াতে হবে। বুস্টার ডোজ যারা নেয়নি, তাদের দ্রুত টিকা নিতে হবে।’
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম বলেন, ‘সারা বিশ্বে করোনা মহামারি বেড়ে গেছে। চীনে অসংখ্য মানুষ আবারও আক্রান্ত হচ্ছে। টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য ভয় বেশি।’