রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২২ ডিসেম্বর, ২০২২ ১০:০৩ : অপরাহ্ণ
ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ‘শীতল যুদ্ধের’ রেশ এবার এসে পড়েছে বাংলাদেশে। তৃতীয় দেশে পশ্চিমা হস্তক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে ঢাকায় রুশ দূতাবাস থেকে বিবৃতি দিলে মস্কোকে পাল্টা কটাক্ষ করে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস। এবার যুক্তরাষ্ট্রকে খোঁচা দিয়ে পাল্টা জবাবে ব্যঙ্গচিত্র শেয়ার করেছে রুশ দূতাবাস।
এই পাল্টাপাল্টি চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
রুশ দূতাবাস গত মঙ্গলবার তাদের ফেসবুক পেজে বাংলাদেশসহ অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে পশ্চিমা হস্তক্ষেপের বিষয়ে বিবৃতি দেয়।
একদিন পর অর্থাৎ গত বুধবার ওই বিবৃতি নিয়ে পাল্টা একটি টুইট করে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস। সেখানে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান নিয়ে মস্কোকে খোঁচা দেয় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
বিষয়টি এখানেই থেমে থাকেনি। একই দিন রাতে রাশিয়া দূতাবাস টুইটারে একটি ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করেছে।
ব্যঙ্গচিত্রে রাশিয়া তাদের ভাষায় বুঝিয়েছে, বর্তমানে বিশ্ব পররাষ্ট্রনীতি এভাবে চলছে। ব্যঙ্গচিত্রের এক পাশে দেয়া হয়েছে পাখির ছবি, অপর দিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেনের পতাকা। মূলত ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে পশ্চিমা বলয়ের নেতৃত্বে যে যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে, সেটিই বোঝানো হয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বসে দুই পরাশক্তির বিরোধ প্রকাশ্য হয়ে পড়েছে। টুইটার আর ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে একে অন্যের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করেছে তারা।
ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস বুধবার (২১ ডিসেম্বর) তাদের টুইটে প্রশ্ন তুলেছে, জাতিসংঘের ঘোষণা অনুসরণ করে রাশিয়া অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে বদ্ধপরিকর থাকার বিষয়টি ইউক্রেনের ক্ষেত্রে অনুসরণ করা হয়েছিল কি না।
এর আগে গত মঙ্গলবার ঢাকায় রাশিয়া দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছিল, গণতন্ত্র সুরক্ষা বা অন্য কোনো অজুহাতে বাংলাদেশসহ তৃতীয় কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে রাশিয়া বদ্ধপরিকর।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অগ্রহণযোগ্যতা এবং তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা সম্পর্কিত ১৯৬৫ সালের জাতিসংঘের ঘোষণা অনুসারে, কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক যা–ই হোক না কেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করার অধিকার অন্য কোনো রাষ্ট্রের নেই। দুর্ভাগ্যবশত, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে (বিশেষত, স্নায়ুযুদ্ধের পর থেকে), হস্তক্ষেপ না করার নীতি লঙ্ঘনের সমস্যাটি বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। কারণ, অনেকে বিশ্বাস করে, তারা তাদের নিজেদের স্বার্থে ওই নীতি লঙ্ঘন করতে পারে।
রাশিয়া দূতাবাস এমন এক সময়ে তৃতীয় দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিষয়ে এই বিবৃতি দেয়, যখন পশ্চিমা দেশগুলোর মিশনগুলো নিয়ে সরকার সরাসরি উষ্মা প্রকাশ করছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিদেশি মিশনগুলো খোলামেলাভাবে তাদের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেছে।