রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১:২৯ : অপরাহ্ণ
গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশি তল্লাশির ঘটনায় ৫০ লাখ টাকা সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপাসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মলনে তিনি এই দাবি করেন।
তিনি এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এর সঙ্গে জড়িত পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকে বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর ও মালামাল লুটে অংশ নেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এই ঘটনায় নগদ অর্থসহ ক্ষতি ও লুট হওয়া সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ৫০,৮২,৫০০ (পঞ্চাশ লক্ষ বিরাশি হাজার পাঁচশত) টাকা। প্রকৃতপক্ষে একটি ডাকাতির ঘটনা।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘কোনো অফিস বা গৃহ তল্লাশির সময় মালিকপক্ষ এবং নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সাক্ষী হিসেবে রাখার সাধারণ আইন অগ্রাহ্য করে পুলিশ যা করেছে তা হানাদার বাহিনীর আচরণকে স্মরণ করিয়ে দেয়।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘পুলিশ তাদের মামলায় বলেছে, বিএনপি নেতা-কর্মীরা নাকি ইট-পাথর, বাঁশের লাঠি এবং ককটেল নিয়ে তাদের ওপর আক্রমণ করেছে। বিপুল ও মারাত্মক সব আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত কয়েক হাজার পুলিশকে ইট-পাথর, বাঁশের লাঠি ও তাদের ভাষায় ককটেল দিয়ে আক্রমণ করার মতো হাস্যকর অভিযোগ জনগণ বিশ্বাস করে না। পুলিশের এজাহারেই বলা হয়েছে যে, তারা ৭ ডিসেম্বর বিকেলে মোট ১৭৯টি টিয়ারগ্যাস ও ৪৬০টি শর্টগানের গুলি ছুড়েছে এবং ৬টি সাউন্ড বোমা নিক্ষেপ করেছে। প্রকৃত পক্ষে এই সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘পুলিশের ওপর আক্রমণকারী বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যবহৃত অস্ত্র হিসাবে আলামত দেখানো হয়েছে ফুটপাত ও রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পাওয়া ৫ বস্তা ইটের টুকরা (যা শহরের যে কোনো সড়ক থেকে যে কোনো সময় সংগ্রহ করা যায়), ৮০টি বাঁশের লাঠি (যা শহরের বহু স্থানে প্রকাশ্যে বিক্রয়ের জন্য রাখা হয়) ও লালটেপে মোড়ানো কথিত ককটেলের ভঙ্গাংশ (যা ব্যবহৃত টিয়ার গ্যাসের শেল কিম্বা পথের আবর্জনারও অংশ হতে পারে)।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘এমন অসম যুদ্ধের বিবরণ ছোটদের গল্প কিম্বা স্বৈরাচারী শাসকদের প্রেসনোটেই শুধু দেখা যায়। তথাকথিত ক্রসফায়ারের গল্পের মতোই এসব গল্প এখন শুধুই কৌতুকের খোরাক এবং অক্ষমের আর্তনাদ।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘এই ঘটনার পর গত কয়েক দিনে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১৩০০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সব ঘটনা জনগণের তীব্র ঘৃণা ও অনাস্থার শিকার পতনোম্মুখে সরকারের স্বৈরাচারী কায়দায় টিকে থাকার ব্যর্থ প্রয়াস বলেই দেশবাসী মনে করে।’
সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।