রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ১০:১৬ : অপরাহ্ণ
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হেনস্তার ঘটনা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রশ্ন রেখে বলেছেন, ‘সরকার বলছে, অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকে বলা হয়নি। এটার অর্থ হচ্ছে সরকারকে না বলে কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়া যাবে না। এটা কোথায় আছে?’
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও তো পুলিশ আছে। সরকার অবগত আছে। আর যদি বলাও না হয়ে থাকে, তাহলে সরকারকে না বলে কোথাও গেলে সেই মানুষগুলো নিরাপত্তা পাবে না এটা হতে পারে নাকি? তাদের বলে গেলে আপনি নিরাপত্তা পাবেন, না বলে গেলে নিরাপত্তা পাবেন না, এটা কি একটা দেশের নিরাপত্তার চরিত্র তার ব্যত্যয় ঘটছে না।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা গভীর উদ্বেগের বিষয় উল্লেখ করে সাবেবক এ মন্ত্রী বলেন, ‘একজন কূটনীতিবিদ একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে গেছেন। সেখানে যাওয়ার পর সরকারি দলের মদদে ও সহযোগিতায় কিছু লোক (মায়ের কান্না নামে একটি সংগঠন) একটি প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে সেখানে উপস্থিত হওয়াটাই তো আইনবিরোধী। যে কোনো ব্যক্তির অনুষ্ঠান করার স্বাধীনতা আছে। কিন্তু আরেকটা অনুষ্ঠানে গিয়ে সেটাকে অনেকটা বাধাগ্রস্ত করার যে প্রক্রিয়া সেটা অগণতান্ত্রিক।’
আমীর খসরু বলেন, ‘সরকার তাদের (মায়ের কান্না সংগঠন) বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেটা তো আমরা দেখিনি। একটি দেশে বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা যদি প্রশ্নবিদ্ধ হয়, সেই দেশের সত্যিকারের চরিত্র কী, তা সরকারের এ সমস্ত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রতিফলন ঘটছে। সরকারের মদদ ও সহযোগিতায় এই ঘটনা ঘটেছে। এটা সরকারের মন্ত্রীদের কথাবার্তায় পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। এই ধরনের একটি ঘটনাকে তারা পরোক্ষভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তারা চাচ্ছে এই ধরনের ঘটনা ঘটুক। সেখানে একটা ভয়-ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি হোক।’
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে নিরাপত্তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘এতোদিন ছিল বাংলাদেশের মানুষের নিরাপত্তাহীনতা, এখন দেখা যাচ্ছে কূটনীতিকদের নিরাপত্তাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এই দেশগুলোর সরকারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো। তাদের সঙ্গে আমাদের বড় বাণিজ্য আছে, বহুবিধ গভীর সুসম্পর্ক আছে। কূটনীতিকদের নিরাপত্তাহীনতার যে প্রতিফলন, এটা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিদেশে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
আমীর খসরু বলেন, ‘এ রকম ঘটনা আমরা আগেও দেখেছি। সরকারি দলের মদদে এবং সরকারের মদদে কিছু লোক আগেও আমেরিকার একজন সাবেক রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট একটি নৈশভোজে গিয়েছিলেন, সেখানে ভাঙচুর করেছে। এর আগে গুলশানের একটি হোটেলে বিএনপির একটি মানবাধিকার অনুষ্ঠানে সেখানে তারা একই লোক (মায়ের কান্না) বাইরে উপস্থিত হয়ে সেটা বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। এই যে একটি অনুষ্ঠান হলো, সেখানে গিয়ে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা সরকারি মদদে, এটা তো আওয়ামী লীগের চরিত্রে পরিণত হয়েছে।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তা নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের উদ্বেগ