শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা বিএনপি

গোলাপবাগ মাঠ থেকে বিএনপির গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ১০ দফা ঘোষণা


রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠের গণসমাবেশ থেকে ১০ দফা ঘোষণা করেছে বিএনপি। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১০ ডিসেম্বর, ২০২২ ৪:৪৬ : অপরাহ্ণ

ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ১০ দফা ঘোষণা করেছে বিএনপি। আগামী ২৪ ডিসেম্বর সারাদেশে গণমিছিলের মধ্য দিয়ে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের’ ১০ দফা কর্মসূচি শুরু করবে দলটি।

আজ শনিবার রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে আয়োজিত গণসমাবেশে ১০ দফা ঘোষণা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সমাবেশের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সমাবেশকে পণ্ড করতে নানাভাবে চেষ্টা করেছে, ষড়যন্ত্র, চাক্রান্ত করছে। এর অংশ হিসেবে নয়াপল্টনে বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছে। বিনা উসকানিতে এমন হামলা পাকবাহিনীও করেনি। এই হামলার তীব্র্র নিন্দা জানাই।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘দিনের ভোট রাতে করে যারা আজকে ক্ষমতায়, তারা ভয় পাচ্ছে। এই ভয় থেকে তারা সমাবেশ করতে দেয় না। যারা গণতন্ত্রের কথা বলে, মানুষের অধিকারের কথা বলে, ভোটাধিকারের কথা বলে, তাদেরকে এই সরকার ভয় পায়। যে কারণে ষড়যন্ত্র করে এই সমাবেশকে বাধা দিয়েছে।’

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘জনগণ আর সরকারের রক্তচক্ষু ভয় পায় না। লাখো লাখো জনতা সমাবেশে এসেছেন। আজকের সমাবেশে আপনাদের জন্য বার্তা নিয়ে এসেছি। এ দেশের মানুষ আর প্রতারিত হতে রাজি নয়। তারা রায় দিয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে তারা (সরকার) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছে। সারা বাংলাদেশের জনগণ বার্তা দিয়েছে যে, তারা আর এই সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এজন্য সরকারকে হটাতে হবে।’

বিএনপির ঘোষিত ১০ দফা-

১. বর্তমান জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ।

২. ১৯৯৬ সালে সংবিধানে সংযোজিত ধারা ৫৮-খ, গ ও ঘ-এর আলোকে একটি দল নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার বা অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন।

৩. নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ সরকার বা অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন। সেই নির্বাচন কমিশন অবাধ নির্বাচনের অনিবার্য পূর্বশর্ত হিসেবে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে আরপিও সংশোধন, ইভিএম পদ্ধতি বাতিল ও পেপার ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল।

৪. খালেদা জিয়াসহ বিরোধীদলীয় সব নেতা কর্মী, সাংবাদিক এবং আলেমদের সাজা বাতিল। সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও রাজনৈতিক কারাবন্দিদের অনতিবিলম্বে মুক্তি। দেশে সভা, সমাবেশ ও মতপ্রকাশে কোনো বাধা সৃষ্টি না করা। সব দলকে স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে প্রশাসন ও সরকারি দলের কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ বা বাধা সৃষ্টি না করা। স্বৈরাচারী কায়দায় বিরোধী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে নতুন কোনো মামলা ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার না করা।

৫. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪–সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী আইন বাতিল করা।

৬. বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাস ও পানিসহ জনসেবা খাতের মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল।

৭. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারকে সিন্ডিকেটমুক্ত করা।

৮. ১৫ বছর ধরে বিদেশে অর্থপাচার, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত ও শেয়ারবাজারসহ রাষ্ট্রীয় সব ক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্নীতি চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠন। দুর্নীতি চিহ্নিত করে দ্রুত যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।

৯. গত ১৫ বছরে গুমের শিকার সব নাগরিককে উদ্ধার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ভাঙচুর এবং সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।

১০. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে সরকারি হস্তক্ষেপ পরিহার করে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়া।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর