বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪ | ১২ আষাঢ়, ১৪৩১ | ১৯ জিলহজ, ১৪৪৫

মূলপাতা আঞ্চলিক রাজনীতি

চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে জনসমুদ্র

ভোট চুরি করলে মানুষ মেনে নেয় না: শেখ হাসিনা


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ৫:১৫ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা জনসমুদ্রে রূপ নেয়। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

কেউ যদি ভোট চুরি করে বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেয় না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘ওরা (বিএনপি) জানে ইলেকশন হলে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। তাই তারা ইলেকশন চায় না, তারা সরকার উৎখাত করতে চায়। এমন কিছু আসুক যারা একেবারে নাগরদোলায় করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে এটাই তারা আশা করে, এটাই তাদের বাস্তবতা।’

আজ রোববার বিকেলে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপি নাকি ঢাকা দখল করবে, সরকারকে উৎখাত করবে। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। আত্মসমর্পণের আগে ১০ ডিসেম্বর থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যা শুরু করেছিল। বাংলাদেশে আত্মসমর্পণ করতে হবে জেনে, এই দেশ যেন সামনে এগিয়ে চলতে না পারে সে কথা মাথায় রেখেই তারা এ ঘটনা ঘটায়।’

আরও পড়ুন: ঢাকার সমাবেশ নিয়ে বিএনপির হঠাৎ নরম সুর

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, সেই ১০ ডিসেম্বর বিএনপির খুব প্রিয় একটা তারিখ। বোধ হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পদলেহনের দোসর ছিল বলেই ১০ ডিসেম্বর তারা ঢাকা শহর নাকি দখল করবে। আর আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবে।’

বিএনপিকে হুঁশিয়ার করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি তাদের বলে দিতে চাই, খালেদা জিয়া ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল। আর ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল বলেই তাকে বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেয়নি। সারা বাংলাদেশ ফুঁসে উঠেছিল। জনতার মঞ্চ করেছিলাম আমরা। খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল পদত্যাগ করতে। দেড় মাসও যায়নি, খালেদা জিয়া পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। সে কথা বিএনপির মনে রাখা উচিত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যেমন জাতির পিতাকে হত্যা করে, সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেনা আইন লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করেছিল। ওদের ধারণা ওই ভাবেই তারা ক্ষমতায় যাবে। গণতান্ত্রিক ধারা তারা পছন্দ করে না। আজকে গণতান্ত্রিক ধারা আছে বলেই তো বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে। দীর্ঘ দিন গণতান্ত্রিক আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘মানুষ পুড়িয়ে মারার হিসাব একদিন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে দিতে হবে। বিএনপি দেশের ক্ষতি করে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন হয়। এই চট্টগ্রামে আমরা ব্যাপক উন্নয়ন করেছি।’

ভাষণের শুরুতেই জনসভায় যোগ দেয়া দলীয় নেতাকর্মী ও সর্বসাধারণের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনারা ক্যান আছন, গম আছননি?’ (আপনারা কেমন আছেন, ভালো আছেন?)

সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘বিজয়ের মাসে আমি আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি। ২৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বিজয়ের মাসে এগুলো চট্টগ্রামবাসীর জন্য আমার উপহার।’

চট্টগ্রামের কথা সবসময় মনে পড়ে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাবা জেল থেকে বের হলেই চট্টগ্রামে নিয়ে আসতেন। করোনার কারণে দীর্ঘ সময় আসতে পারেনি, তাই আজ হাজির হয়েছি। এই লালদিঘীর সামনে ১৯৮৮ সালে ২৪ জানুয়ারি আমাকে হত্যা করতে গুলি করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে খালেদা জিয়াও জড়িত ছিলেন। সেই হত্যাকারী পুলিশ অফিসারকে প্রমোশন দেয়া হয়।’

শেখ হাসিনার ৫০ মিনিটের বক্তব্যজুড়ে ছিল দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির কথা।

দেশের রিজার্ভ নিয়ে ছড়ানো গুজবে কান না দেওয়ার জন্য মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিএনপি খুনি দল, অগণতান্ত্রিক দল। তারা ক্ষমতায় এলে মানুষের সম্পদ লুটপাট করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়নে কাজ করে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে কাজ করে। তাই আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে হবে।’

নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জনসভায় বিভিন্ন মন্ত্রী, এমপি ও দলের সিনিয়র নেতারা বক্তব্য রাখেন।

জনসভা পরিচালনা করেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।

এর আগে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠ আওয়ামী লীগের তাকর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। জনসভা প্রাঙ্গণ ছাড়িয়ে আশপাশের এলাকায়ও মানুষের ঢল নামে। জনসভা জনসমুদ্রে রূপ নেয়।

পলোগ্রাউন্ড মাঠে জায়গা না পেয়ে অনেক নেতাকর্মী সামনের সড়কে অবস্থান নেন। পাশের এলাকা সিআরবি, টাইগারপাস, কদমতলী এলাকায়ও নেতাকর্মীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর