শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা খেলা

ভারতের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিলেন মিরাজ


বাংলাদেশকে দুর্দান্ত এক জয় এনে দেওয়া মিরাজের উদযাপন। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ৭:৪৮ : অপরাহ্ণ

১৮৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৩৬ রানে বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলেছিল ৯ উইকেট। তখনো ৬৩ বলে ৫১ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ যে এই ম্যাচটা যে জিতে যাবে, কেউ কল্পনা করেছিল?

প্রায় অসম্ভব কাজটাই সফল হলো মেহেদী হাসান মিরাজের বীরত্বে। আর শেষ উইকেটে তিনি সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন মোস্তাফিজুর রহমানকে।

দীপক চাহারের বলটা কাভার ড্রাইভ করে দৌড় দিলেন মিরাজ। যেন ভারতের মুঠো থেকে জয়টা ছিনিয়ে নিলেন মিরাজ। খাদের কিনারা থেকে যেভাবে ১ উইকেটে দলকে জেতালেন, অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হবে!

আজ রোববার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৪১.২ ওভারে স্কোরবোর্ডে ১৮৬ রান তোলে ভারত। জবাব দিতে নেমে ২৪ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।

শেষ দিকে লড়াই করে জয় এনে দেওয়া মিরাজ উপহার দেন ৩৮ রানের ইনিংস।

টস জিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন।

প্রথম বল হাতে আসেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ভারতের ওপেনার রোহিত শর্মা-শিখর ধাওয়ানকে সে ওভারে মাত্র ১ রান দেন মুস্তাফিজ। দ্বিতীয় ওভারে হাসান মাহমুদ দেন ৫ রান। প্রথম উইকেটের দেখা মিলে ৬ষ্ঠ ওভারে। মিরাজের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে ১৭ বলে ৭ রান করে ফেরেন ধাওয়ান।

এরপরে রোহিত-বিরাট মিলে গড়েন ২৫ রানের জুটি। তাদের দুজনকেই ফেরান অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। নিজের প্রথম এবং দলের ১১তম ওভারে এসেই মাত্র ১ রান দিয়ে দুই উইকেট তুলে নেন সাকিব।

১০.২ ওভারে ২৭ রানে ব্যাট করা রোহিতকে বোল্ড করেন সাকিব। দুবল পরেই লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৫ বলে ৯ রানে ব্যাট করা বিরাট কোহলি ফিরলে চাপে পড়ে ভারত।

চাপ থেকে দলকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন লোকেশ রাহুল। লোকেশ রাহুল ও শ্রেয়াস আয়ারের জুটিতে ৫৬ বলে ৪৩ রান আসে। দলীয় ৯২ রানে এবাদত হোসেনের বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শ্রেয়াস।

পরে ওয়াশিংটন সুন্দারকে নিয়ে রাহুল গড়েন ৬০ রানের জুটি। ইনিংসের সর্বোচ্চ এই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। ৪৩ বলে ১৯ রান করা সুন্দার ক্যাচ দেন এবাদতের হাতে।

দলের রান তখন ৩৩ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫২। এর পরের ওভারে এসে আবার উইকেট পায় বাংলাদেশ। ৩৩.২ ওভারে এবাদত এবার আউট করেন শাহবাজকে। ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত।

৩৫তম ওভারে ফের সাকিব দেখান ভেলকি। সাকিব ভেলকিতে ওই ওভারেই আউট হন শার্দুল ঠাকুর এবং দিপক চাহার। ১৫৮ রানে ৮ উইকেটের ইনিংস তারপরও টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন লোকেশ রাহুল।

রাহুল এবার সিরাজকে নিয়ে আরেকটি উইকেট গড়ার চেষ্টা করেন। তবে ৩৯.৪ ওভারে এবাদত আউট করেন রাহুলকে। যতটুকু আশা ছিল ভারতের সেটাও গুঁড়িয়ে দেন এবাদত।

পরের উইকেটটিও নেন এবাদত। শেষ পর্যন্ত ৪১.২ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ভারত করে ১৮৬ রান।

ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৩ বল থেকে ৭০ রান করেন লোকেশ রাহুল। ৭০ রানের ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও চারটি ছক্কার মার। বাংলাদেশের হয়ে ৫ উইকেট নেন সাকিব, ৪টি নেন এবাদত।

জবাব দিতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ওপেনিং করতে নামা নাজমুল শান্ত। দলের ২৬ রানে ফেরেন তিনে নামা এনামুল হক। তিনি করেন ১৪ রান। ওই ধাক্কা ৪৪ রানের জুটি গড়ে সামলান লিটন দাস ও সাকিব আল হাসান।

লিটনের ব্যাট থেকে আসে ৬৩ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ৪১ রান। দলীয় শতকের আগে সাকিব আল হাসান ৩৮ বলে ২৯ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন।

তবু ম্যাচ পক্ষে ছিল বাংলাদেশের। পাঁচে ও ছয়ে নামা দুই অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ ধীরে ব্যাটিং করলেও দলকে টানছিলেন। রিয়াদ ৩৫তম ওভারের শেষ বলে ৩৫ বলে ১৪ রান করে আউট হন।

পরের বলেই বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। তিনি করেন ৪৫ বলে ১৮ রান। দলের রান তখন ১২৮। জিততে দরকার ৫৯।

তখনও ম্যাচ হাতছাড়া হয়নি বাংলাদেশের। ক্রিজে ছিলেন আফিফ ও মেহেদি মিরাজ। কিন্তু বাঁ-হাতি আফিফ জুটি দিতে পারেননি। তিনি ৬ রান করে ফিরে যান। পরেই এবাদত এসে হিট উইকেট হন।

পেসার হাসান মাহমুদও রানের খাতা খুলতে পারেননি। হারের চিন্তা মাথায় না নিয়ে মুস্তাফিজকে নিয়ে মিরাজ লড়াই চালিয়ে যান এবং ভক্তদের ভাসান জয়ের উল্লাসে।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর