রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৭ নভেম্বর, ২০২২ ৩:২৮ : পূর্বাহ্ণ
খেলা তখন গড়িয়েছিল ৬৩ মিনিটে। স্কোর লাইন তখনও গোল শূন্য। গোল বার থেকে লিওনেল মেসি ২৫ গজ দূরে। সেখানে দেখা মাত্রই তার দিকে বল ঠেলে দিলেন ডি মারিয়া। বল পাওয়া মাত্রই ঠেলে দিলেন। আহামরি কিছু না, ছিল না মেসির নান্দনিক বৈচিত্রতাও। খুব সাধারণ শটে পরাস্ত হলেন মেক্সিকান গোলরক্ষক গুলিয়েরমো ওচোয়া। বল জালে জড়াতেই উল্লাসে মেতে উঠলেন মেসি। তাতেই এগিয়ে যায় তার দল। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে আর্জেন্টিনা।
বাঁচিয়েছে সারা বিশ্বে থাকা আর্জেন্টিনার কোটি ভক্তের আশা। বাঁচিয়েছে নক আউট পর্বের আশা।
অঘটন দিয়েই শুরু হয় আর্জেন্টিনার কাতার বিশ্বকাপ মিশন। সৌদি আরবের কাছে অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে দারুণ চাপে পড়ে আর্জেন্টিনা। নকআউট পর্বে যেতে জয়ের বিকল্প ছিল না মেসিদের সামনে। এমন সমীকরণে মেসিরা তুলে নিলেন দুর্দান্ত জয়।
কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটির প্রথমার্ধে গোলহীন থাকে দুদল। ম্যাচে ভাগ্য গড়ে দেওয়া গোল দুটি আসে দ্বিতীয়ার্ধে।
ম্যাচে শুরুতে খুব একটা ছন্দে দেখা যায়নি আর্জেন্টিনাকে। ম্যাচের ৩০ মিনিটে একবারও আক্রমণে যেতে পারেনি লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। শুরুতে উল্টো দাপট দেখিয়েছে মেক্সিকো।
ম্যাচের ২০তম মিনিটে ফ্রি কিক পায় মেক্সিকো। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। এর পাঁচ মিনিট পর মেসির নেওয়া শট ঠিকানা মিস করে। ৩২তম মিনিটে দি পল ফাউলের শিকার হলে ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু বক্স থেকে বেশ দূরে হওয়ায় তার সুবিধা নিতে পারেনি আর্জেন্টিনা।
প্রথমার্ধে একবার ভালো সুযোগ আসে আর্জেন্টিনার। ডান দিক থেকে ডি মারিয়ার কর্ণার কিক ডি বক্সে ভেতরের দিকে আসছিল। মাঝামাঝি জায়গায় থাকা লাউতারো মার্টিনেজ হেড দিয়ে জালে পাঠাতে পারতেন।
কিন্তু মেরে দেন পোস্টের বাইরে। সহজ সুযোগ হারায় আর্জেন্টিনা। এরপর বাকি সময়ে আর গোল না পাওয়ার হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়ে লিওনেল স্কালোনির দল।
বিরতি থেকে ফিরে আক্রমণে ওঠেন মেসি। তখনই প্রতিপক্ষের ডি বক্সে ফাউলের শিকার হন। ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু এবারও ব্যর্থ মেসি। ২২ গজ দূর থেকে নেওয়া ফ্রি কিক পোস্টের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন পিএসজি তারকা।
তবে অপেক্ষার প্রহর আর লম্বা হতে দেননি মেসি। ম্যাচের বয়স তখন ৬৪ মিনিট। ডান দিক থেকে মেসি বল বাড়ান ডি মারিয়া। নিজের দৃঢ়তায় বল নিয়ে প্রতিপক্ষের ডি বক্সের সামনে যান মেসি।
ডি বক্সের বাইরে থেকে মাটি গড়ানো নিচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। গিয়ের্মো ওচোয়া ঝাঁপিয়েও নাগাল পাননি, বল পোস্ট ঘেঁষে চলে যায় ঠিকানায়।
পরের গোলটি আসে ফার্নান্দেজের পা থেকে। ম্যাচের ৮৭তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে দুর্দান্ত শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ফার্নান্দেজ। ম্যাচের বাকি অংশেও সুযোগ আসে আর্জেন্টিনার। তবে গোলের দেখা আর মেলেনি। দুই গোলের ব্যবধান ধরে রেখেই শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়ে লিওনেল স্কালোনির দল।
পুরো ম্যাচে মেক্সিকান শিবিরে ৫বার আক্রমণ করে আর্জেন্টিনা। যার মধ্য অনটার্গেট শট ছিল ২টি। দুটিতেই মেলে সাফল্য। বিপরীতে ৪বার আক্রমণ করে মেক্সিকানরা। যার একটি ছিল অনটার্গেট শট।
এই নিয়ে বিশ্বকাপে মেক্সিকোর বিপক্ষে চারটি ম্যাচ খেলেছে আর্জেন্টিনা। সবগুলোতেই জয়ের স্বাদ পেয়েছে ‘আলবিসেলেস্তেরা।’ মেক্সিকোর পর এবার পোল্যান্ডকে হারাতে পারলেই দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকেট পাবে লিওনেল মেসির দল।