রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২২ নভেম্বর, ২০২২ ৬:০৯ : অপরাহ্ণ
কাতার বিশ্বকাপের প্রথম ‘অঘটন’ ঘটলো। তৃতীয় দিন এসে যেন বিশ্বকাপে রঙ লাগলো!
টুর্নামেন্টের শুরুটা যে এমন দুঃস্বপ্নের মতো হবে, সেটা হয়তো কল্পনাও করতে পারেননি মেসি-মার্টিনেজরা। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের বিপক্ষে হতাশ করলো দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে র্যাঙ্কিয়ের তৃতীয় স্থানে থেকে। আর সৌদি আরব বিশ্বকাপ খেলেতে আসে ৫১তম স্থানে থেকে।
কিন্তু দুর্বল রক্ষণ আর অফসাইডের মহড়ায় আরব দেশটির সামনে দাঁড়াতেই পারলো না আর্জেন্টিনা।
আজ মঙ্গলবার কাতারের সবচেয়ে বড় লুসাইল স্টেডিয়ামে ‘সি’ গ্রুপের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে আর্জেন্টিনা।
দলের জয়ের ম্যাচে সৌদির হয়ে গোল করেছেন সালেহ আল শেহরি ও সালেম আল দাওসারি। আর আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করেন মেসি। এই গ্রুপের এটাই প্রথম ম্যাচ। এই গ্রুপের অন্য দুদল হলো পোল্যান্ড ও মেক্সিকো।
প্রথমবারের মতো আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয়ের স্বাদ পেয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। এর আগে চারবারের সাক্ষাতে দুই পরজায় ও দুই ড্র ছিল সৌদির।
ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণে এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু অফসাইড আর সৌদি আরবের রক্ষণ ভুগিয়েছে তাদের। পুরো ম্যাচে ৭০ ভাগ সময় বল দখলে রেখে ১৫ বার আক্রমণ করে আর্জেন্টিনা। যার দুটি ছিল অনটার্গেট শট। কিন্তু একটিও আলোর মুখ দেখেনি।
অন্যদিকে রক্ষণে জোর দেওয়া সৌদি আরব প্রথমার্ধে একবারও আক্রমণে যেতে পারেনি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে পরপর দুই গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় সৌদি।
শক্তির বিচারে এগিয়ে থাকা আর্জেন্টিনাকে দারুণ রক্ষণ দিয়ে ছাড় দেয়নি সৌদি আরব। কিন্তু শুরুর দিকে ফাউল করে খেসারত দিতে হয় তাদের।
এদিন ম্যাচের ৮ মিনিটে রদ্রিগো দি পলকে পাস দিতে বক্সের মাথা থেকে কিক নেন মেসি। তখন লিয়ান্দ্রো পারেদেসকে আটকাতে গিয়ে ডি বক্সে তাঁকে ফেলে দেন সৌদি ডিফেন্ডার আল বুলাইয়াহি।
সৌদি আরবের ফাউলের সুবাদে ভিএআর প্রযুক্তির মাধ্যমে পেনাল্টি পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। পেনাল্টি থেকে সফল স্পট কিকে আর্জেন্টিনাকে লিড এনে দেন মেসি।
কাতার বিশ্বকাপে গোলের খাতা খোলা মেসির এটাই সৌদি আরবের বিপক্ষে প্রথম গোল। তাছাড়া এই গোলের মাধ্যমে আর্জেন্টিনার জার্সিতে সর্বোচ্চ চারটি বিশ্বকাপে গোল করার রেকর্ড গড়লেন মেসি।
২২তম মিনিটে আবারও স্কোরবোর্ডে নাম লেখান মেসি। কিন্তু অফসাইডে বাতিল হয়। একইভাবে অফসাইডে পড়ে মার্টিনেসের দুই গোলও বাতিল হয়। প্রথমটি ভিআরএ দেখে বাতিল দেন রেফারি। পরেরটিতে সঙ্গে সঙ্গে ওঠে অফসাইডের ইঙ্গিত।
গোলের জন্য ছটফট করতে থাকা আর্জেন্টিনা প্রথমার্ধের শেষ পর্যন্ত আর গোলের দেখা পায়নি। ফলে এক গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যেতে হয়েছে মেসিদের।
বিরতিতে থেকে ফিরেই আরও এলোমেলো হয়ে যায় আর্জেন্টিনা। এই সুযোগ ভালোভাবেই কাজে লাগায় সৌদি আরব। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতায় ফেরে সৌদি আরব। ৪৮তম মিনিটে ফেরাস আল ব্রিকানের বাড়িয়ে দেওয়া বল থেকে দূরের পোস্ট দিয়ে স্কোরলাইন ১-১ করেন সালেহ আল শেহরি।
গোল খাওয়ার ধাক্কা না সামলাতেই আর্জেন্টিনাকে স্তব্ধ করে এগিয়ে যায় সৌদি আরব। ৫৩ মিনিটে সালেম আল দাওসারির গোলে লিড নিয়ে নেয় আরব দেশটি। হতাশ আর্জেন্টিনা এরপরই পথ হারায়।
টানা ৩৬ ম্যাচে জয়ের ছন্দে উড়তে থাকা আর্জেন্টিনা শিবিরে উঁকি দেয় হারের শঙ্কা। সেই শঙ্কাই সত্যিই হলো। হার দিয়েই বিশ্বকাপ শুরু হলো আর্জেন্টিনার।
পরিসংখ্যান ও শক্তির বিচারে এই ম্যাচে পরিষ্কারভাবে ফেভারিট ছিল আর্জেন্টিনা। তা ছাড়া দারুণ ছন্দে থেকে বিশ্বকাপে আসে দলটি।
টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপে আজ অভিযান শুরু করেন লিওনেল স্কালোনির দল। কিন্তু বিশ্বকাপের মঞ্চে এসেই যে হারের মুখ দেখতে হবে সেটা কে জানতো!