প্রতিনিধি, সিলেট
প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর ২০২২, ৫:৩৩ অপরাহ্ণ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকার এখন মামলা খেলা করছে। কোনো কিছুই ঘটে নাই। তবু তারা নাশকতার কথা বলে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। আবার হুমকি দেয়, বাড়াবাড়ি করলে বিএনপিকে নাকি হেফাজতের মতো দমন করা হবে।’
এ সময় তিনি সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘হুমকি-ধমকি দিয়ে কোনো কাজ হবে না। জনগন জেগে উঠেছে। এই সরকারের পতন ছাড়া তারা ঘরে ফিরে যাবে না।’
আজ শনিবার বিকেলে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিএনপি বিভাগীয় এ গণসমাবেশের আয়োজন করে।
আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির এই গণসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মাঠ। এমনকি মাঠ ছাড়িয়ে আশপাশের রাস্তায় মানুষ দাঁড়িয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য শুনেন।
আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ ছাড়িয়ে চৌহাট্টা, রিকাবীবাজার ও দরগাগেট এলাকায় হাজারো মানুষ দাঁড়িয়ে বিএনপির নেতাদের বক্তব্য শুনতে দেখা যায়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাধারন মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ, কৃষক শ্রমিক কিন্তু এখন শান্তিতে নেই। গতকালও চিনির দাম, তেলের দাম বেড়েছে। সবকিছুর দাম বেড়েছে। মানুষ এখন খেতে পারে না। তিন কোটি মানুষ বেকার। অথচ তারা ১০টাকা দামে চাল খাওয়াবে বলেছিলো।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার দেশে ভয়াবহ এক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। গত ১৪ বছর ধরে অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়ে শেখ হাসিনার সরকার দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। এই সরকারের বিচার হবে জনতার আদালতে। মানুষের অধিকার হরণ করার জন্য এই বিচার হবে। এদের ছাড়া হবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। মধ্যবর্তী নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। ইভিএমে কোনো ভোট বাংলাদেশে হবে না।’
আরও পড়ুন: তারা তো আন্দোলন করতেই জানে না, বিএনপিকে কটাক্ষ কাদেরের
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কেবল সংবিধানের দোহাই দেন। এই সংবিধান তো তিনি সংশোধন করিয়েছেন। এই সংবিধান আমরা মানি না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা জনগণের সরকার চাই। জনগণ এবার তাদের ভোট দেখে নেবে। দিনের ভোট রাতে দেওয়া আর চলবে না।’
সমাবেশে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা একটি যুদ্ধ শুরু করেছেন। এই যুদ্ধ মুক্তির যুদ্ধ, অধিকার ফিরে পাওয়ার যুদ্ধ, ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার যুদ্ধ। সিলেটের ইতিহাস হচ্ছে যুদ্ধের ইতিহাস, যুদ্ধ জয়ের ইতিহাস। আজকে এই সৈরচারী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র ফেরাতে এই সিলেট থেকেই আবার যুদ্ধ শুরু হলো।’
সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদেরকে উদ্দেশ করে বলে, ‘তিনি বলছেন খেলা হবে। কিন্তু দরজা বন্ধ করে ঘরের মধ্যে যে খেলা এটা ছাড়া আর খেলা তিনি জানেন না। যখন পাপিয়া-পরীমনিরা ধরা পরে, তখন আওয়ামী লীগ নেতাদের বুক ধরফর করে। বিএনপি আনাড়ি খেলোয়াড়দের সাথে খেলে না। খেলা শিখে আসেন। নিরপেক্ষ সরকার নিয়ে খেলেন। শেখ হাসিনাও জামানত হারাবেন।’