রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৭ নভেম্বর, ২০২২ ৮:০৭ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম নগরীর দক্ষিণ হালিশহর ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও সংসদ সদস্য এম এ লতিফের মধ্যে ‘মেরুকরণ’ হয়েছে।
ওই ওয়ার্ডের সম্মেলনে নির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম হলেন এম এ লতিফের অনুসারী। আর সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক সুমন হলেন আ জ ম নাছিরের অনুসারী।
আজ বৃহস্পতিবার নগরীর বন্দরটিলা দক্ষিণ হালিশহর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তারা নির্বাচিত হন। দীর্ঘ ২৪ বছর পর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
সম্মেলনে নির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আগের কমিটির যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। তিনি আগে নগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন। মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর তিনি এমপি লতিফের সঙ্গে যোগ দেন।
আর সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক সুমন ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর যুবলীগের সাবেক সদস্য।
সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও সংসদ সদস্য এম এ লতিফের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ রয়েছে। দুজনের মধ্যে অনেকটা ‘সাপে-নেউলে’ সম্পর্ক।
দলীয় একটি সূত্র বলেছে, আ জ ম নাছির ও এম এ লতিফের মধ্যে তলে তলে বিরোধের বরফ গলছে। ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দুই নেতার দুই অনুসারী একে অপরের সঙ্গে ‘আপোষ’ করে নেতৃত্বের আসনে বসেছেন। দুই নেতা তাদের দুই অনুসারীকে সায় না দিলে তাদের (আসলাম ও সুমন) মধ্যে কখনো আপোষ হতো না। দুই নেতার (নাছির ও লতিফ) মধ্যে হয়তো মেরুকরণ হয়েছে।
জানা গেছে, সম্মেলনে ওয়ার্ডের তিনটি ইউনিটের ৭২ জন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। আ জ ম নাছির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আসলাম ও সুমনের নাম প্রস্তাব করলে উপস্থিত কাউন্সিলরদের সবাই তাদেরকে সমর্থন দেন। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থী ছিলেন না। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আসলাম ও সুমন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ ইলিয়াছ রাজনীতি সংবাদকে অভিযোগ করে বলেন, ‘কমিটি নিয়ে তারা দুজনের (আসলাম ও সুমন) মধ্যে আপোষ হয়েছে। তারা দুজনই অবৈধ ব্যবসায়ী। তারা তাদের পছন্দের মানুষদের কাউন্সিলর নির্বাচিত করেছেন। তারা কাউন্সিলরদের কাউকে মামলার ভয় দেখিয়েছেন আর কাউকে টাকা-পয়সা দিয়েছেন। মাফিয়ারা যদি কন্ট্রোল করে তাহলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কীভাবে থাকবে?’
জানতে চাইলে সম্মেলনে নির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। কিন্তু তারা আমাদের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতার ভয়ে পরে সরে দাঁড়িয়েছেন। কাউন্সিলররা সবাই হাত তুলে আমাদের সমর্থন দিয়েছেন। কেউ তাদেরকে প্রভাবিত করেনি।’
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীর সঙ্গে আপোষের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য ওয়ার্ডে গ্রুপিং থাকলেও আমাদের ওয়ার্ডে ভিন্ন একটা বিষয় আছে। সেটা আমি বলতে চাই না।’
জিয়াউল হক সুমন বলেন, ‘আমি তো গার্মেন্টস ব্যবসা করি। এটা কীভাবে অবৈধ হয়? আর কাউন্সিলররা স্বাভাবিকভাবে আমাদের পূর্ণ সমর্থন দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। কোনো কাউন্সিলরকে আমরা প্রভাবিত করেনি। যারা অভিযোগ করছেন তাদেরকে একজন কাউন্সিলরের নাম বলতে বলেন।’