রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২ নভেম্বর, ২০২২ ৬:১৯ : অপরাহ্ণ
বৃষ্টির আগের বাংলাদেশ আর বৃষ্টির পরের বাংলাদেশ যেন এক ভিন্ন দল। বৃষ্টির পূর্ব পর্যন্ত ম্যাচে বেশ আধিপত্য বিস্তার করেই খেলছিল টাইগাররা। তবে, বৃষ্টির পরে বদলে গেল সেই চিত্র।
দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকা বাংলাদেশের ব্যাটাররা যেন হয়ে গেল দিশেহারা। লিটন দাসের বিদায়ের পর বাকি ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিলে শেষ পর্যন্ত ভারতের কাছে ৫ রানের পরাজয়বরণ করতে হলো বাংলাদেশকে।
এ জয়ের ফলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে টপকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে ভারত।
আজ বুধবার অ্যাডিলেড ওভালে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৪ রান করে ভারত।
১৮৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে লিটন দাসের ব্যাটিং ঝড়ে ৭ ওভারে ৬৬ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ। এরপরই নামে বৃষ্টি।
বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশের জন্য নতুন টার্গেট নির্ধারণ করা হয়। ১৬ ওভারে বাংলাদেশকে দেয়া হয় ১৫১ রানের লক্ষ্যমাত্রা।
কিন্তু বাংলাদেশ নির্ধারিত ১৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪৫ রান। এই পরাজয়ের ফলে সেমিফাইনালে পা রাখার সম্ভাবনা আর রইলো না বাংলাদেশের।
টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ে নেমে প্রথম ওভারটা দারুণ কাটে বাংলাদেশের। প্রথম ওভারে মাত্র ১ রান দেন তাসকিন।
পরের ওভারে হাসান মাহমুদের হাতে বল তুলে দেন সাকিব। হাসান প্রথম ওভারে এসেই তুলে নেন রোহিতের উইকেট। ইয়াসির আলীর ক্যাচ হয়ে ভারত অধিনায়ক ফেরেন ৮ বল খেলে ২ রান করে।
রোহিত অল্পতে মাঠ ছাড়লেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে রানের গতি বাড়ায় ভারত।
কোহলিকে নিয়ে লোকেশ রাহুল দলকে নিয়ে যেতে থাকেন বড় সংগ্রহের দিকে। শরীফুল ইসলামের ‘নো’ বলে রাহুলের ছক্কায় আসে জুটির পঞ্চাশ। ফ্রি হিটে আরেকটি ছক্কা মেরে পরের বলে মারেন বাউন্ডারি। শরীফুলের ওই ওভার থেকে আসে ২৪ রান।
এরপর সাকিবের বলে ডাবলস নিয়ে ফিফটি পূ্র্ণ করেন রাহুল। ৩ চার ও ৪ ছয়ে ফিফটি করার পর সাকিব আল হাসানের শিকার হন তিনি।
৩২ বলে ৫০ রান করে ফিরেছেন ভারতীয় এই ওপেনার। কোহলি ও রাহুলের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে উঠেছে ৩৭ বলে ৬৭ রান।
রোহিত-রাহুলকে হারিয়ে আগ্রাসী হয়ে উঠেছিল ভারত। সূর্যকুমারকে নিয়ে সমান গতিতে রান তুলেছেন বিরাট কোহলি।
সূর্যকুমার যাদব শুরু থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক। ১৬ বলেই ৪ বাউন্ডারিতে ৩০ রান তুলে ফেলা এই ব্যাটারকে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেছেন সাকিব আল হাসান।
ভয়ংকর সূর্যকুমারের পর আরেক বিধ্বংসী ব্যাটার হার্দিক পান্ডিয়াও(৫) চলে গেলেন সাজঘরে। এরপর কার্তিকও তেমন কিছু করতে পারেননি।
১৩০ রানে ভারত হারায় ৪ উইকেট।
১৭তম ওভারে এসে ৩৭ বলে ফিফটি করেন কোহলি। তবে শেষ পর্যন্ত ৪৪ বলে ৮ চার আর ১ ছক্কায় ৬৬ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ভারতীয় এই তারকা ব্যাটসম্যান।
শেষ দিকে শরিফুলকে তুলোধুনো করে বড় পুঁজি পেয়ে যায় ভারত।
৪ ওভারে ৫৭ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন শরীফুল ইসলাম। হাসান মাহমুদ ৪৭ রানে নেন ৩টি উইকেট। ৩৩ রানে ২ উইকেট শিকার সাকিবের।
ভারতের দেয়া টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে লিটনের দাসের ঝড়ো ফিফটিতে বাংলাদেশ ৭ ওভারেই তুলে নেয় ৬৬ রান। ২৬ বলে ৩ ছয় ও ৭ চারে লিটন করেন ৫৯ রান।
এরপরই মাঠে আঘাত হানে বেরসিক বৃষ্টি। বৃষ্টি আইনে সেসময় বাংলাদেশ ১৭ রান বেশি করে এগিয়ে ছিল।
বৃষ্টি শেষ হলে বাংলাদেশকে নতুন লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয় ১৬ ওভারে ১৫১ রানের। ম্যাচে জয় পেতে তখন বাংলাদেশকে করতে হতো ৫৪ বলে ৮৫ রান।
কিন্তু স্কোরবোর্ডে মাত্র ২ রান তুলতেই লোকেশ রাহুলের দুর্দান্ত থ্রোতে রান আউট হন লিটন। তার আগে তিনি ২৭ বলে ৩ ছয় ও ৭ চারে করেন ৬০ রান।
দ্বিতীয় উইকেটে শান্ত ও সাকিব মিলে গড়েন ১৬ রানের জুটি। দলীয় ৮৪ রানে শান্ত ব্যক্তিগত ২১ রান করে ফিরেন।
দলীয় শতরানের এক রান আগে আফিফ আর্শদ্বীপের শিকারে পরিণত হন। এরপরই টাইগারদের মধ্যে আসা যাওয়া শুরু হয়ে যায়।
শেষ পর্যন্ত তাসকিন ৭ বলে ১২ রান ও সোহান ২৯ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন।
ভারতের হয়ে অর্শদ্বীপ সিং ৪ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন। শামি ৩ ওভারে ২৫ রানে নেন এক উইকেট। হার্ডিক পান্ডিয়া ৩ ওভারে ২৮ রান দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট দখল করেন।