রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৭ অক্টোবর, ২০২২ ১২:৪৮ : অপরাহ্ণ
টাইগারদের পাড়ার ছোটভাইদের মতো বানিয়ে ছাড়লো প্রোটিয়ারা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১০৪ রানের ব্যবধানে লজ্জাজনকভাবে হেরেছে বাংলাদেশ।
আজ বৃহস্পতিবার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তাসকিন-সাকিবদের তুলোধোনা করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২০৬ রানের পাহাড় গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আফ্রিকান পেসারদের দাপুটে বোলিংয়ে ১৬.৩ ওভারে ১০১ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে শুরুটা ভালো করতে দেয়নি বাংলাদেশ।
ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন পেসার তাসকিন।
কিন্তু তাতে হিতে বিপরীতই হয়েছে!
ব্যাট হাতে ওয়ানডাউনে নেমে তাসকিন-সাকিবদের তুলোধোনা করেন রাইলি রুশো।
পরের ১৩ ওভারে বাংলাদেশ আর কোনো সাফল্য পায়নি।
পাওয়া প্লেতে ১ উইকেটে ৬৩ রান নিয়ে ফেলেন ডি কক-রুশো জুটি।
কুইন্টন ডি কক আর রাইলি রুশো মিলে গড়েছেন ১৬৩ রানের বিশাল এক জুটি। সেই জুটি ভাঙার তাড়নায় দুটো রিভিউই ইনিংসের সপ্তম ওভারে খুইয়ে বসে সাকিব আল হাসানের দল।
সেই জুটিটা অবশেষে ভাঙল ইনিংসের ১৫তম ওভারে।
বাঁ-হাতি ওপেনার ডি কক ৩৮ বলে সাতটি চার ও তিন ছক্কায় ৬৩ রানের ইনিংস খেলে আফিফ হোসেনের বলে ফিরে যান।
এরপরই বাংলাদেশ যেন ফিরলো ম্যাচে। শেষ পাঁচ ওভারে ২৯ রান দিয়ে তুলে নিলো ৩ উইকেট।
তিন উইকেট হারালেও রাইলি রুশো অন্য প্রান্তে ছিলেন বিধ্বংসী। তিনি ১৯তম ওভারে ফিরে যাওয়ার আগে ৫৬ বলে ১০৯ রান করেন।
রুশোর ব্যাট থেকে আটটি ছক্কা ও সাতটি চারের মার দেখা যায়। তিনি ১৯তম ওভারের ৩য় বলে সাকিবকে উড়িয়ে মারতে গেলে ক্যাচ নেন লিটন দাস।
রুশোর বিদায়ের পর আর কেউই বলার মতো কোনো রান করতে পারেননি। ফলে শেষ দিকে এসে আর ঝড় তোলা হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার।
প্রোটিয়াদের ইনিংস শেষমেশ থামে পাঁচ উইকেট খুইয়ে ২০৫ রানে।
বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে মুস্তাফিজুর কিছুটা ভালো করেছেন। তিনি ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়েছেন, যদিও উইকেট পাননি।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হিরো হয়ে ওঠা তাসকিন এই ম্যাচে ৩ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে একটি উইকেট নিয়েছেন। সাকিব ৩ ওভারে ৩৩ রান হজম করে নিয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট শিকার করেছেন হাসান ও আফিফ।
২০৬ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে ২ ছক্কা আর ১ চার মেরে ১৭ রান তুলে নেন ওপেনার সৌম্য-শান্ত। পরের ওভারে আসে ৯ রান।
২.১ ওভারে দলীয় ২৬ রানে সৌম্য ১৫(৬) আউট হন। ১ রানের ব্যবধানে শান্ত ৯ (৯) আউট হলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
৪.৪ ওভারে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ১(৪) আউট হলে সে চাপ আরও বাড়ে।
নিয়মিত যাওয়া-আসার মিছিলে নাম লেখান আফিফ হোসেনও। রাবাদার শর্ট বলে ওয়েইন পারনেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন আফিফ ১(৫)।
এদিকে দলের এমন বিপদে হাল ধরতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজও। ১৩ বলে ১১ রান করে আউট হয়েছেন তিনি। শূন্য রানে ফেরেন মোসাদ্দেক। উইকেটে বেশিক্ষণ স্থির হননি নুরুল হাসান সোহানও ২(৬)।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন লিটন দাস। দলীয় ৮৫ রানে তাব্রেইজ শামসির বলে স্টাবসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ২০৬ রানের টার্গেটে জয়ের জন্য যেভাবে ব্যাটিং দরকার ছিল সেটি দেখাতে পারেনি লাল-সবুজের দল।
হতাশার বৃত্তে ঘুরিয়ে শেষ পর্যন্ত ১০৪ রানের হার মেনে নিতে হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে তাবরেইজ শামসি ২০ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ২০৫/৫ (টেম্বা বাভুমা ২, কুইন্টন ডি কক ৬৩, রাইলি রুশো ১০৯, এইডেন মার্করাম ১০; তাসকিন ৩-০-৪৬-১, মিরাজ ৩-০-৩২-০, হাসান মাহমুদ ৪-০-৩৬-১, মুস্তাফিজ ৪-০-২৫-০, মোসাদ্দেক ২-০-১৬-০, সাকিব ৩-০-৩৩-২, আফিফ ১-০-১১-১)
বাংলাদেশ: ১৬.৩ ওভারে ১০১/১০ (শান্ত ৯, সৌম্য ১৫, লিটন ৩৪, সাকিব ১, আফিফ ১, মিরাজ ১১, মোসাদ্দেক ০, সোহান ২, হাসান ০, তাসকিন ১০, মুস্তাফিজ ৯* ; রাবাদা ৩-০-২৪-১, আনরিখ নর্কিয়া ৩.৩-০-১০-৪, তাব্রেইজ শামসি ৪-০-২০-৩, কেশব মহারাজ ৪-০-২৪-১, পারনেল ২-০-১৮-০)।
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ১০৪ রানে জয়ী।
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ: রাইলি রুশো।