সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা চট্ট-মেট্টো

সোমবার চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচন

খোশ মেজাজে পেয়ারুল, নারায়নের কপালে চিন্তার ভাঁজ


এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম ও নারায়ন রক্ষিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :১৬ অক্টোবর, ২০২২ ৭:০৯ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচন আগামীকাল সোমবার। বিএনপিবিহীন এ নির্বাচনে সবার কৌতূহল দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী নিয়ে।

দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন-এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম ও নারায়ন রক্ষিত। পেয়ারুলের প্রতীক আনারস আর নারায়নের প্রতীক মোটর সাইকেল।

এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। নারায়ন রক্ষিত জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি নামে একটি দলের কেন্দ্রীয় মহাসচিব। তবে এ দলটি আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

পেয়ারুল ইসলামের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। নারায়ন রক্ষিতের বাড়ি আনোয়ারায়।

৬১ বছর বয়সী এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন। তবে তিনি বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সঙ্গে প্রতিন্দন্দ্বিতা করে হেরে যান। গত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও ভোটের আগে সরে দাঁড়ান।

৬২ বছর বয়সী নারায়ন রক্ষিত গত জেলা পরিষদ নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচনে শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়ান তিনি। তবে তিনি আনোয়ারা-কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম-১৩) আসনে ২০১৮ ও ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী ভোটের মাঠে সরব থাকলেও প্রকাশ্যে কোনো প্রচারণা চালাননি নারায়ন রক্ষিত।

সরকার দলীয় প্রার্থীর লোকজন তাকে হুমকি-ধমকি দেওয়ার কারণে তিনি প্রকাশ্যে ভোটের মাঠে নামতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন।

নারায়ন রক্ষিত রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘আমার প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারীকে অপহরণ করা হয়েছিল। গত ১৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আমি বিষয়টি তুলে ধরেছিলাম। পরে তারা ফিরে আসলেও সরকার দলীয় প্রার্থীর লোকজন ফোন করে আমাকে প্রচারণা না চালাতে হুমকি-ধমকি দিয়েছে। যে কারণে আমি ভোটের মাঠে নামতে পারিনি। অথচ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী নেই তবুও তারা আমাকে আতঙ্ক মনে করছে।’

গত নির্বাচনে সরে দাঁড়ালেও এবার কেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন?-এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গত জেলা পরিষদ নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হয়েছিল। আমরা আওয়ামী লীগকে সমর্থন করি। তাই আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু এবার যেহেতু দলীয় প্রতীকে নির্বাচন, তাই সরে দাঁড়াইনি।’

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে মনে করেন?-এ প্রশ্নের উত্তরে নারায়ন রক্ষিত বলেন, ‘আমার সন্দেহ আছে। আনোয়ারা, কর্ণফুলী ও ফটিকছড়ি উপজেলায় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে আমি শঙ্কিত। সরকার দলীয় প্রার্থীর লোকজন আমার পোলিং এজেন্টদের নাকি কেন্দ্রে ঢুকতে দিবে না। এ নিয়ে আমি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টরা প্রবেশ করতে না পারলে তা নিয়ে আমাদের কিছু করার নেই। কেন্দ্রে এজেন্টরা প্রবেশ করার পর আমরা তাদের নিরাপত্তা দিবো।’

নারায়ন রক্ষিতের কপালে চিন্তার ভাঁজ থাকলেও খোশ মেজাজে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম।

রাজনীতি সংবাদকে তিনি বলেন, ‘আমার পাশে দল আছে, সেই সাথে আমার রাজনৈতিক ঐতিহ্য আছে। তাই আমি শতভাগ আশাবাদী।’

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে পেয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘তাকে থানায় মামলা করতে বলেন। তিনি যে দল করেন তার কোনো অস্তিত্ব আছে? সেই দলের একজন কর্মী আছে?’

চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রার্থীর পাশাপাশি চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী সদস্য এবং সাধারণ সদস্যদের ১৬টি ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬৬ জন। এর মধ্যে চারটি সাধারণ ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন চারজন।

১৫ উপজেলার ১৫টি কেন্দ্রে সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হবে।

নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৭৩০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ হাজার ৯৩ ও মহিলা ভোটার সংখ্যা ৬৩৭ জন।

১৯১ জন ইউপি চেয়ারম্যান ও ২ হাজার ২৯২ জন ইউপি সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মেম্বার ভোট দিবেন।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর