গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও নির্বাচন নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের পরামর্শ সরকারের দরকার নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। একইসঙ্গে সাংবাদিকদেরও বিদেশিদের কাছে দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে প্রশ্ন না করার অনুরোধ করেছেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সেগুনবাগিচায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্রুনাই’র সুলতানের বাংলাদেশ সফরের প্রস্তুতির বিষয়ে জানাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছিল। সেখানে নির্ধারিত প্রসঙ্গ ছাড়াও সমসাময়িক নানা বিষয়ে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এক সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ না থাকা নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি যে বক্তব্য দিয়েছেন সরকার তা যৌক্তিক মনে করে কিনা, যদি তা মনে না করে তবে কোনো প্রতিবাদ জানাবে কিনা?
জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা (মিডিয়া) উনাকে প্রশ্ন করেন বলেই বেচারা বলে। আপনারা উনাদের কাছে না গেলেই হয়। পরক্ষণেই মন্ত্রী বলেন, আপনারা যখন যাবেন তখন অবশ্যই তার দেশ সম্পর্কে জানতে চাইবেন।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে হবে: মার্কিন রাষ্ট্রদূত
তাদের কাছে কি প্রশ্ন করতে হবে সেটাও শিখিয়ে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, ‘আমেরিকায় কেন এতো অল্প সংখ্যক লোক ভোট দেয় সেটা জিজ্ঞাসা করতে পারেন।’
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) ওখানে তো ২৫-৩০ ভাগের বেশি ভোট দেয় না। বাংলাদেশে ৭৮% ভোট কাস্ট হয়। তাদের উপ-নির্বাচনে দেড় থেকে দুই পারসেন্ট লোক ভোট দেয় কেন? তাদের ইয়াংরা রাজনীতিতে উৎসাহী নয় কেন? বাংলাদেশে যে একাত্তরে জেনোসাইড হলো, এখন মিয়ানমারে হচ্ছে, তা বন্ধে তাদের ভূমিকা ছিল কি? এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের জন্মই হয়েছে গণতন্ত্র এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লড়াই করে। সুতরাং বাংলাদেশকে কারও এ নিয়ে শেখাবার দরকার নেই।’
অবাধ, সুষ্ঠু এবং সহিংসতামুক্ত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ দাবি করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব সময় গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় এসেছে। ২০০১ সালে হেরে যাওয়ার পর শেখ হাসিনা স্মুথ পাওয়ার ট্রানফারের নজির তৈরি করেছেন।’
সমাপনী প্রশ্নে বলা হয়, মার্কিন দূত তো নির্বাচন নিয়ে অব্যাহতভাবে বলেই যাচ্ছেন, তার বক্তব্যের প্রতিবাদ তো সরকারের করা উচিত।
জবাবে আব্দুল মোমেন প্রশ্নকর্তার সাজেশনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘মার্কিন দূত ম্যাচিউর এনাফ। কূটনৈতিক শিষ্টাচার ফলো করেই তার বক্তব্য রাখা উচিত বলে মনে করে সরকার।’
আরও পড়ুন: নির্বাচন সুষ্ঠু করতে জনগণকেই এগিয়ে আসতে হবে: মার্কিন রাষ্ট্রদূত