রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক
প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:১৪ পূর্বাহ্ণ
‘ম্যাচের ভাগ্য টসের ওপর।’এশিয়া কাপের ফাইনালের আগে ঘুরেফিরে টসভাগ্যই আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছিল। সেই টস তত্ত্বকে ভুল প্রমাণ করে এশিয়ার সেরা দলের মুকুট পড়েছে এবারের আসরে ডার্ক হর্স হিসেবে অংশ নেওয়া শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ শিরোপা ঘরে তুলেছে লঙ্কানরা।
আজ রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের ফাইনালে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭০ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। জবাব দিতে নেমে ১৪৭ রানে থেমে যায় পাকিস্তান।
টস জিতে আগে বোলিং নেওয়া পাকিস্তান শুরুতেই পায় সাফল্য। প্রথম ওভারেই কুশল মেন্ডিসের উইকেট তুলে নেন নাসিম শাহ। তরুণ এই পেসারের গতিতে পরাস্ত হয়ে গোল্ডেন ডাকে ফেরেন লঙ্কান ওপেনার।
আরেক ওপেনার পাথুম নিশানকাকে থামান হারিস রউফ। পাকিস্তানি পেসারের করা দ্বিতীয় বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে অধিনায়ক বাবরের হাতে ধরা পড়েন পাথুম। ১১ বলে ১ চারে ৮ রান করে যান তিনি।
নিজের পরের ওভারে এসে আবারও রউফের আঘাত। এবার ফিরিয়ে দেন দানুস্কা গুনালিথাকাকে (১)। পাকিস্তানি পেসারের গতিময় বলে এলোমেলো হয়ে যায় লঙ্কান ব্যাটাররের স্টাম্প।
পাওয়ার প্লেতে তিনটি উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৪২ রান তোলে শ্রীলঙ্কা।
পাওয়ার প্লের পরপরই ইফতেখারের বলে কাটা পড়েন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। থিতু হওয়া ডি সিলভাকে নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে বিদায় করেন ইফতেখার। ৪ বাউন্ডারিতে ২১ বলে ২৮ রান করেন তিনি।
এরপর বোলিংয়ে এসে অধিনায়ক দাসুন শানাকার (২) স্টাম্প ভাঙেন শাদাব খান।
৮.৯ ওভারে ৫৮ রান তুলতেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে লঙ্কানরা।
কিন্তু সেই চাপ সামলে রাজাপাকসে-হাসারাঙ্গার ব্যাটে পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছে লঙ্কানরা।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও ভানুকা রাজাপাকসের পার্টনারশিপে ৫৮ রান আসে।
হাসারঙ্গাকে আউট করে এই জুটির বিচ্ছেদ ঘটান হারিস রফউ।
২১ বলে ৩৬ রান করে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা আউট হলেও অন্যপ্রান্ত আঁকড়ে রাখেন ভানুকা রাজাপাকসে।
চামিকা করুনারত্নেকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানের বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালান রাজাপাকশে।
রাজাপাকশের দুর্দান্ত ইনিংসে চড়ে শেষ পর্যন্ত শক্ত পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা। তিনি ৪৫ বলে ৩ ছয় ও ৬ চারে ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন। আর চামিকা করুণারত্নে ১৪ বলে ১ ছয়ে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
পাকিস্তানের হয়ে তিনটি উইকেট নেন হারিস রউফ। আর একটি করে উইকেট নেন নাসিম শাহ, শাদাব খান এবং ইফতিখার আহমেদ।
জবাব দিতে নেমে প্রথম ওভারে শূন্য বলে ৯ রান পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি পাকিস্তান।
বরাবরের মতোই ব্যর্থ হন বাবর আজাম। ধারাবাহিক ব্যর্থ হওয়া বাবর আজ ফেরেন ৫ রানে।
উইকেটে এসে শূন্যতে বিদায় নেনে ফখর জামানও। এক ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে শুরতেই চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান।
এরপর মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিখার আহমেদ ৭১ রানের দারুণ জুটি গড়ে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে রাখেন।
ইফতিখার ১৩.২ ওভারে দলের ৯৩ রানে ফিরে যান। তিনি ৩১ বলে ৩২ রান করেন।
এরপর ধস শুরু হয় পাকিস্তানের। ১২০ রানে পড়ে যায় ৮ উইকেট।
মোহাম্মদ রিজওয়ান খেলেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৫ রানের ইনিংস। ৪৯ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় ওই ইনিংস খেলেন তিনি।
একে একে ব্যর্থ হন মোহাম্মদ নওয়াজ (৬), খুশদীল শাহ (২), আসিল আলী (০), শাদাব খান (৮)।
হ্যারিস রউফ ১৩ রান করে হারের ব্যবধান একটু কমান।
শ্রীলঙ্কার হয়ে অসাধারণ স্পেল করেছেন প্রোমোদ মাদুশান ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
প্রোমোদ ৪ ওভার করে হাত ঘুরিয়ে ৩৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। হাসারাঙ্গা তার ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট।
এছাড়া মহেশ থিকসানা একটি ও চামিকা করুনারত্নে নিয়েছেন দুই উইকেট।