নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৬ আগস্ট, ২০২২ ৮:২৬ : অপরাহ্ণ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমার একটা প্রশ্ন, আমাদের নেতারাও তো এখানে আছেন। জাতির পিতা তো সেদিন অনেককে ফোনও করেছিলেন। কী করেছিলেন তারা? বেঁচে থাকতে সবাই থাকে, মরে গেলে যে কেউ থাকে না-তার জীবন্ত প্রমাণ। এজন্য আমি কিছু আশা করি না।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘৩২ নম্বর, ওই ধানমন্ডি। লাশগুলো তো পড়েছিল। কত স্লোগান, তুমি আছ যেখানে, আমরা সেখানে। কোথায় ছিল সেই মানুষগুলো? একটি মানুষ ছিল না সাহস করে এগিয়ে আসার? একটি মানুষ ছিল না প্রতিবাদ করার? কেন করতে পারিনি? এত বড় সংগঠন, এত সমর্থক, এত লোক- কেউ তো একটা কথা বলার সাহস পায়নি।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘১৫ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট সেই লাশ পড়েছিল। ১৬ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে গেল টুঙ্গিপাড়ায়। কারণ দূর্গম পথ। যেতে ২২ থেকে ২৪ ঘন্টা সময় লাগে। তাই তো আর কেউ যেতে পারবে না। সেখানে নিয়ে মা-বাবার কবরে পাশে তাকে (বঙ্গবন্ধু) মাটি দিয়ে আসে। সেখানকার মৌলভী সাহেব আপত্তি করেছিলেন যে, আমি তাকে গোসল দেবো, এরপর কাফন-দাফন করবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যেসব দেশ মানবাধিকারের প্রশ্ন তোলে, আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়, তারা তো খুনিদের আশ্রয় দিয়ে রেখেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই খুনি রাশেদ। এই রাশেদ ছিল মিন্টু রোডে যে অপারেশন হয় সেই অপারেশনের কমান্ডিং অফিসার। আমেরিকার সঙ্গে আমরা বারবার কথা বলছি, কিন্তু তারা তাকে (রাশেদ) দিচ্ছে না। এদের কাছ থেকে আমাদের মানবতার সবক নিতে হয়। তারা আমাদেরকে মানবতার সবক শেখায় যারা আমার বাবা, মা, নারী, শিশু- তাদেরকে হত্যা করেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে চারিদিকে অনেক প্রশ্ন, মানবাধিকারের প্রশ্ন আসে। মানবাধিকারের কথা বলা হয়, আমাদের সরকারকে মানবাধিকারের ব্যাপারে প্রশ্ন করে। যারা এই প্রশ্ন করে তাদের কাছে আমার জিজ্ঞাসা, আমাদের মানবাধিকার, ১৫ আগস্ট আমরা যারা আপনজন হারিয়েছি তাদের মানবাধিকার কোথায় ছিল? আমাদের তো বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। আমি আমার বাবা-মা হারিয়েছি, কিন্তু আমি মামলা করতে পারবো না।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমি আর আমার ছোট বোন রেহানা বিদেশে ছিলাম, তাই বেঁচে গিয়েছিলাম ঘাতকের বুলেটের নির্মম আঘাত থেকে। এ বাঁচা কত যন্ত্রণার বাঁচা। যারা বাঁচে, তারাই জানে। কিন্তু আমাদের মানবাধিকার যে লঙ্ঘন করা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে যদি সরকারে আসতে না পারতাম। যদি ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিল করতে না পারতাম- এই হত্যার বিচার কোনোদিন হতো না।’
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, ড হাছান মাহমুদ প্রমুখ।