শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা দেশজুড়ে

বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ: সেই রাতের লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন ভুক্তভোগী নারী


ভুক্তভোগী নারী

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৪ আগস্ট, ২০২২ ৪:২০ : অপরাহ্ণ

টাঙ্গাইলে মঙ্গলবার রাতে একটি চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ডাক্তারি পরীক্ষায় ওই নারীর ধর্ষণের আলামত মিলেছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী গণমাধ্যমকে সেই রাতের ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। কাজ করেন নারায়ণগঞ্জে একটি পোশাক কারখানায়। ঘটনার দিন রাতে তিনি ঈগল পরিবহনের বাসে নারায়ণগঞ্জ যাচ্ছিলেন। রাত ৮টায় তিনি বাসে উঠেন। বাসে তার সিট ছিল পেছনের দিকে। রাত ১১টার পর ডাকাতরা যাত্রীবেশে সিরাজগঞ্জের তিনটি আলাদা জায়গা থেকে সেই বাসে ওঠে।

তিনি বলেন, ডাকাতি শুরুর আগে আমার পাশের খালি সিটে ডাকাতদের একজন বসতে চাইলে তাকে বসতে দিইনি। পরে আবার যখন আসে, তখন আমি তাকে বলি আপনি হেলপারকে ডেকে সিট নেন। পরে সে আর সেই সিটে বসেনি।

ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, কিছুক্ষণ পর তারা সিগারেট খেয়ে ধোঁয়া দেয় আমাদের গায়ে। এর ১০ মিনিট পরই শুরু করে ছিনতাই। ডাকাতি শুরু করলে আমি তাদের বাধা দিয়েছিলাম। এ কারণে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়।

তিনি বলেন, বাসচালকের কাছে গিয়ে তিনজন তাকে জিম্মি করে। চালকের গলায় ছুরি চেপে ধরে সিট থেকে উঠতে বলে। তারা গাড়ি চালাবে বলে জানায়। এর পর তাকে তুলে বেঁধে ফেলে। আমার পাশে বসা হেলপারকে তুলে নেয়। এর পর আমার সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে আমার হাত-মুখ চোখ বেঁধে ধর্ষণ করে।

ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, এ রকম ঘটনার বিচার চাই আমি। আজ এক নারীর সঙ্গে ঘটবে আরেক দিন আরেক নারীর সঙ্গে ঘটবে। আমি ওদের ফাঁসি চাই। যাতে ওদের দেখে অন্যরা ভালো হয়ে যায়।

তিনি জানান, ছিনতাইকারীরা যার কাছে টাকা বেশি পাইছে তাকে কিছু বলেনি। সবার থেকে টাকা সব কিছু ছিনিয়ে নেয় তারা। এক মহিলা ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিল তার কাছে ৯ হাজার টাকা ছিল তাও নিয়ে নেয়।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের গাইনী বিভাগের প্রধান ডাক্তার রেহেনা পারভীন বলেন, ওই নারীর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

গত মঙ্গলবার রাতে ঈগল পরিবহনের একটি বাস কুষ্টিয়ার বড়াইগ্রাম থেকে ৩০-৩৫ যাত্রী নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। পথে যাত্রীবেশে ডাকাত দল উঠে প্রথমে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেয়।

পরে যাত্রীদের হাত-পা ও চোখ বেঁধে মারধর এবং লুটের পর এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এরপর ডাকাতদল বাসটি ঘুরিয়ে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের সামনে ফেলে রেখে নেমে যায়।

মধুপুর থানাসূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় বাসের এক যাত্রী অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা করেছেন।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানিয়েছেন, এই লোমহর্ষক ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকি অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর