নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :২৯ জুলাই, ২০২২ ৬:৩৫ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় লেভেলক্রসিংয়ে মহানগর প্রভাতী ট্রেনের ধাক্কায় পর্যটকবাহী একটি মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন সাতজন।
আজ শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার বড়তাকিয়া রেলস্টেশন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মৃতদের মধ্যে চারজন শিক্ষক ও ছয়জন এসএসসি পরীক্ষার্থী আছেন। অপরজন ওই মাইক্রোবাসের চালক।
মৃত ১১ জনের মধ্যে ৯ জনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন-কোচিং শিক্ষাক মো. জিসান, মো. রিদোয়ান, মো. সজিব ও মো. রাকিব।
শিক্ষার্থী মো. আসাদ, মো. হিসাম, মো. মারুফ ও মো সাজ্জাদ এবং মাইক্রোবাসচালক নিরু। বাকি দুজনের নাম জানা যায়নি।
গুরুতর আহত সাতজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আহতরা হলেন-তৌকিদ ইবনে শাওন (২০), তছমির পাবেল (১৬), মো. মাহিম (১৮), মো. সৈকত (১৮), তানভীর হাসান হৃদয় (১৮), মো.ইমন (১৯), আয়াত (১৬)।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হতাহতদের সবার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজার এলাকায়।মাইক্রোবাসের যাত্রীরা খৈয়াছড়া ঝর্ণা দেখে বাসায় ফিরছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসা মহানগর প্রভাতী ট্রেনটি রেললাইন পার হওয়ার সময় মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয়। ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ট্রেনটি মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার সামনে নিয়ে যায়।
মিরসরাই থানার ওসি কবির হোসেন জানান, সংঘর্ষের পর মাইক্রোবাসকে কিছু দূর টেনে নেওয়ার পর ট্রেনের গতি কমে আসে। এরপর ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীরা মাইক্রোবাসের ভেতরে থাকা হতাহতদের উদ্ধার করে।
দুর্ঘটনার পর প্রাথমিকভাবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দাবি করে, ট্রেন আসার সিগন্যাল পেয়ে ওই ক্রসিংয়ের গেটম্যান সাদ্দাম বাঁশ ফেলে ব্যারিকেড দিয়েছিলেন। সেই বাঁশ ঠেলে মাইক্রোবাসটি রেললাইনের ওপর উঠে যায়। এমনকি গেটম্যান লাল পতাকা উড়িয়ে মাইক্রোবাসচালককে থামার নির্দেশনাও দিয়েছিলেন।
তবে দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া মাইক্রোবাসের যাত্রী ইমন গণমাধ্যমকে বলেছেন, দুর্ঘটনার সময় ক্রসিংয়ে গেটম্যান ছিলেন না। কেউ ব্যারিকেডও দেয়নি।
তিনি বলেন, ‘ মাইক্রোবাস যখন একেবারে লাইনের ওপর উঠে যায়, ঠিক তখন খুব জোরে ট্রেনের হুইসেল শুনতে পাই। মুহূর্তেই ট্রেন আমাদের মাইক্রোবাসে ধাক্কা দেয়। এরপর অনেক দূর পর্যন্ত ঠেলে নিয়ে যায়।’
ইমন বলেন, ‘যেদিক দিয়ে ট্রেন মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিয়েছে, তার উল্টো দিকে জানালার পাশে ছিলাম আমি। ট্রেনের গতি যখন কমে যায়, অনেকটাই থেমে গেলে জানালা দিয়ে আমি বেরিয়ে আসি। এরপর আশপাশের লোকজন আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।’
এ দুর্ঘটনার পর গেটম্যান মো. সাদ্দামকে আটক করা হয়েছে।
দুর্ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কমিটিতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) মো. আনছার আলীকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে।