সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা চট্ট-মেট্টো

প্রতিশোধ নয়, ভালোবাসাই হলো নবী পরিবারের বৈশিষ্ট্য: সুফি মিজান


শাহাদাতে কারবালা মাহফিল উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৬ জুলাই, ২০২২ ১০:২৮ : অপরাহ্ণ

আহলে বাইত রাসূলের স্মরণে প্রতি বছরের মতো ১০ দিনের শাহাদাতে কারবালা মাহফিল শুরু হচ্ছে আগামী রোববার। চট্টগ্রাম নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদে ৩৭তম এ মাহফিল চলবে ৯ আগস্ট পর্যন্ত।

মাহফিলের দ্বিতীয় দিন থেকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করবেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মিশরের রাষ্ট্রীয় ক্বারী শায়খ আহমদ নায়না। আহলে বাইতে রাসূলের মান-মর্যাদা নিয়ে বিশ্ব বরেণ্য ইসলামিক স্কলার, পীর মাশায়েখরা আলোচনা করবেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পরিষদ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, খতীবে বাঙাল মাওলানা মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন আলকাদেরী ১৯৮৬ সালে জমিয়াতুল ফালাহ কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই হিজরি নববর্ষ, মাহে মহররম ও আহলে বাইতে রাসূলের স্মরণে ১০ দিনব্যাপী শাহাদাতে কারবালা মাহফিল করে আসছিলেন। এ বছরও যথারীতি ৩৭তম আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সমাজসেবায় একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট শিল্পপতি সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রতিশোধ নয়, মানুষের প্রতি ভালোবাসাই হলো নবী পরিবারের বৈশিষ্ট্য। কারাবালা যুদ্ধে নিজেদের জীবন দিয়ে ভালোবাসার সেই নজির রেখে গেছেন আহলে বাইতে রাসূল।’

পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান বলেন, ‘শাহাদাতে কারবালা মাহফিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে মূলত আহলে বাইতে রাসূলের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসাই প্রদর্শন করেন ইমানি চেতনায় উদ্দীপ্ত আহলে বাইতপ্রেমী মুসলমানরা। তাই আহলে বাইতে রাসূলের আত্মত্যাগের ঘটনা মুসলমানদের মাঝে সতেজ রাখা ইমানি দায়িত্ব। দ্বীন ও সত্যের প্রতি সবাইকে উদ্দীপ্ত ও উজ্জীবিত রাখতে শাহাদাতে কারবালা মাহফিল আয়োজন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এতে অংশগ্রহণ ইমানি দায়িত্ব।’

এবারের শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে দেশ ও বিদেশের উলামা-মাশায়েখ, শিক্ষাবিদ, গবেষক, ইসলামী চিন্তাবিদ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, মন্ত্রী, সরকারি বেসকারি পদস্থ ব্যক্তিরা অতিথি ও আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন।

ইরাকের বাগদাদ শরীফের বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রা.) আওলাদ আশ্-শাইখ আস্-সৈয়দ আল্লামা আফিফুদ্দীন আল্ জিলানী আল বোগদাদী, ভারতের কাসওয়াসা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন কায়েদে মিল্লাত হযরত শাহ সূফী সৈয়দ মাহমুদ আশরাফ আশরাফী আল জিলানী, ফখরুল মাশায়িখ হযরতুল আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ আশরাফ আশরাফি আল জিলানী, তাজুল উলামা হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ নূরানী মিয়া হাশেমী, শ্রীলংকার আল্লামা মুহামম্মদ ইহসান ইকবাল কাদেরী ও খতীবে লা-সানী মাওলান আকবর ইহসানী প্রমুখ মাহফিলে উপস্থিত থাকবেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি জেনারেল আনোয়ার হোসেন, গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ কমিশনার, পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক ও মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান সমন্বয়ক আলী হোসেন সোহাগ, শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পরিষদের সহসভাপতি খোরশেদুর রহমান, সিরাজুল মোস্তফা, সফিউল আজম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. জাফর উল্লাহ, মো. দিলশাদ আহমেদ, মো. সাইফুদ্দিন, মো. ছগীর চৌধুরী, অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন, জাফর আহমদ সওদাগর, আলমগীর পারভেজ, মাহবুবুল আলম, মনছুর শিকদার, আবদুল হাই মাসুম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ৬১ হিজরির ১০ মহররম কারবালা ময়দানে ইয়াযিদ বাহিনীর হাতে নৃশংসভাবে শহীদ হন প্রিয় নবী পরিবারের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)-সহ আহলে বায়তের নিষ্পাপ সদস্যরা। ইয়াযিদি বর্বরতা থেকে সেদিন নারী-শিশুও বাদ যায়নি। পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম মর্মন্তুদ কারবালার ঘটনা স্মরণে মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটে। নবীপ্রেমী ও আহলে বাইতে রাসূলের প্রতি যারা ভালোবাসা হৃদয়ে ধারণ ও লালন করেন তাদের জন্য মহররম মাস তাৎপর্যপূর্ণ ও গুরুত্ববহ। হযরত ইমাম হোসাইনের নেতৃত্বে আহলে বায়তে রাসূল সদস্যরা সেদিন ইয়াযিদি শক্তির কাছে মাথা নত না করে, ইসলামের ন্যায়, সত্য ও ইনসাফের ঝাণ্ডাকে উড্ডীন করেছেন। কারবালার ময়দানে নবী পরিবারের তুলনাহীন আত্মত্যাগ ও কোরবানির মধ্য দিয়ে ইসলামের ভিত্তি মজবুত হয়েছে। দ্বীন ইসলামের পুনরুজ্জীবন ঘটে কারবালার হৃদয়ভেদী ঘটনার মধ্য দিয়ে।

কঠিন মুসিবত সত্ত্বেও হযরত ইমাম হোসাইনের (রা.) দ্বীন ও হকের ওপর অবিচল থাকার নজীর মুসলমানদেরকে সত্যের পথে উৎসর্গীত হওয়ার প্রেরণা জোগায়। কারবালার এ প্রেরণা ইসলামের পুনর্জাগরণে এবং মুসলমানদের আত্মমর্যাদা ও আত্মশক্তি নিয়ে উন্নত শিরে বেঁচে থাকতে উৎসাহিত করে।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর