রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১০ জুলাই, ২০২২ ১১:৫০ : অপরাহ্ণ
‘মানুষের পাশে দাঁড়ানোই বিএনপির রাজনীতি’ উল্লেখ করে বন্যার্তদের কষ্ট লাঘব না হওয়া পর্যন্ত বিএনপিকে তাদের পাশে থাকতে বলেছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
রোববার রাতে গুলশানের বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের কাছে এ কথা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘বেগম খালেদা জিয়া সিলেট, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনায় যেখানে বন্যায় মানুষ প্লাবিত হয়েছে, এই দুর্গত মানুষের খবর আমাদের কাছ থেকে তিনি নিয়েছেন। তিনি আমাদেরকে বলেছেন- ‘তোমরা যেভাবে দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছ ঠিক সেভাবেই তোমরা বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে থাকবে তাদের কষ্ট লাঘব না হওয়া পর্যন্ত। তিনি মনে করেন বন্যার্তদের সেবা করা মানে হচ্ছে মানুষের সেবা করা এবং এটাই রাজনীতির প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘তিনি এখন যে অবস্থায় আছেন তাতে তার ইমিডিয়েট কোনো বিপদ না থাকলেও তিনি এখনো অসুস্থ। আমরা বার বার বলে আসছি- বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বাইরে নেওয়া জরুরি।’’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখনকার ডাক্তাররা বার বার করে বলেছেন-যে রকম উন্নত চিকিৎসা তার (খালেদা জিয়া) দরকার, সেই উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্র এখানে নেই। যে কারণে তারা (চিকিৎসকরা) মনে করেন যে, ম্যাডামের যদি সত্যিকার অর্থে সম্পূর্ণ রোগমুক্ত করার জন্য চিকিৎসা করা দরকার তাহলে সেটা অবশ্যই দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া প্রয়োজন। আমরা সেই কথা আবারো আপনাদের কাছে তুলে ধরছি।’
সাক্ষাতে দেশের রাজনীতি নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘উনি আমাদের দলের প্রধান, দলের চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এখনো তিনি দেশের চলমান যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন তার খোঁজ-খবর রাখছেন। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ নিশ্চয়ই গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করবে।’
খালেদা জিয়া দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলেও জানান মির্জা ফখরুল।
রাত সাড়ে ৮টায় বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটি সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান গুলশানের ‘ফিরোজা’য় প্রবেশ করেন। দেড় ঘণ্টা সাক্ষাত শেষে রাত ১০টায় তারা বেরিয়ে আসেন।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান যুক্তরাষ্ট্রে এবং ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু নিজ নির্বাচনী এলাকায় থাকায় এই সাক্ষাতে তারা অনুপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ইমেইল বার্তায় এ তথ্য জানান।
প্রতি বছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় দলীয় নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন খালেদা জিয়া।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে দুই বছর কারাগারে বন্দি থাকায় তার সঙ্গে নেতাদের ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় হয়নি। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে কারামুক্ত হয়ে গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন তিনি। এবার নাতনিদের নিয়ে গুলশানের বাসায় ঈদ পালন করছেন খালেদা জিয়া।
২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার কারণে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কেউ সাক্ষাতের সুযোগ পাননি। তবে গেল ঈদুল ফিতরের দিন মির্জা ফখরুলসহ স্থায়ী কমিটির কয়েকজন নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।