বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা ধর্ম

অমুসলিমদের কি কুরবানির মাংস দেওয়া যাবে



রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১০ জুলাই, ২০২২ ৪:০১ : অপরাহ্ণ

মুসলমানদের জন্য কোরবানি অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান। এর পেছনে রয়েছে ইসলামের গৌরবান্বিত অতীত ও ত্যাগের অসীম পরীক্ষার নিদর্শন। সেই সঙ্গে প্রভু প্রেমের অনন্য নজিরের ইতিহাস এই কোরবানি।

সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিম পুরুষ-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব। এটি ইসলামের মৌলিক ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। আদম (আ.) থেকে শুরু করে সব নবীর যুগেই কুরবানি পালিত হয়েছে। এটি ‘শাআইরে ইসলাম’ তথা ইসলামের প্রতীকী বিধানাবলির অন্তর্ভুক্ত।

গরিব-দুখী ও পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার এক অন্যতম পথ এই কোরবানি। আমাদের আশপাশে অনেক প্রতিবেশী রয়েছে। যারা অন্য ধর্মের। এক্ষেত্রে অনেকের মনে হয়তো প্রশ্ন দেখা দিতে পারে কোরবানির মাংস অমুসলিমদের দেওয়া যাবে কি না?

আসুন জেনে নেই এ বিষয়ে কুরআন-হাদীস কী বলে?

আমাদের চারপাশে অনেক মুসলিম আছেন যারা ধারণা করেন- কোরবানির মাংস অমুসলিমদের দেওয়া যাবে না। তাদের এই ধারণা সঠিক না। কোরবানির মাংস অমুসলিমদের দেওয়া যায়। এতে অসুবিধার কিছু নেই। বিশেষত অমুসলিম যদি প্রতিবেশী হয়।

এর মূল কারণ প্রতিবেশী হিসেবে তার হক রয়েছে। সাহাবীগণ অমুসলিম প্রতিবেশীর হকের প্রতি সবিশেষ লক্ষ্য রাখতেন।

হাদিস শরীফে এসেছে, আব্দুল্লাজ ইবনে আমর (রা.) এর বাড়িতে একবার একটি বকরি (ছাগল) জবেহ করা হলো। যখন তিনি বাড়িতে ফিরলেন রাসূলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি আমাদের ইহুদী প্রতিবেশীকে এ গোশত হাদিয়া (দান) পাঠিয়েছো? এভাবে দুবার জিজ্ঞেস করলেন। আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, প্রতিবেশীর অধিকার প্রসঙ্গে জিবরাইল (আ.) আমাকে অবিরত উপদেশ দিতেন। এমনকি আমার ধারনা হলো যে, হয়ত শীঘ্রই প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবে। (জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৪৩)

সুতরাং অমুসলিমকে কুরবানীর মাংসসহ অন্যান্য যে কোনো জিনিস দান করা যাবে।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: ‘দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বের করে দেয়নি তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যাংবিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়নদের ভালোবাসেন। (সূরা মুমতাহিনা ৬০:৮-৯)

আল্লাহ কেবল তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বের করে দিয়েছে এবং তোমাদেরকে বের করার কাজে সহায়তা করেছে। তাদের সঙ্গে যারা বন্ধুত্ব করে তারা তো জালেম।’

সুতরাং অমুসলিম বন্ধু কিংবা প্রতিবেশীকে কোরবানির মাংস দেয়া যাবে। কিন্তু ওই অমুসলিম যদি কোরবানিকৃত পশুর মাংস না খান বা তার ধর্মে বিধিনিষেধ থাকে তবে সেক্ষেত্রে বিবেচনা করবেন সেই অমুসলিম বন্ধু কিংবা প্রতিবেশী।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর