শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

নিজ শরীরে আগুন দেয়া ব্যবসায়ী গাজী আনিস মারা গেছেন


গাজী আনিস

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৫ জুলাই, ২০২২ ৯:৪৩ : পূর্বাহ্ণ

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নিজের শরীরে আগুন দেয়া ব্যবসায়ী মো. আনিসুর রহমান ওরফে গাজী আনিস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টা ১০ মিনিটে তার মৃত্যু হয় বলে ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

দেহের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া আনিসকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।

৫০ বছর বয়সী গাজী আনিস কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পান্টি বাজার এলাকার মৃত ইব্রাহিম বিশ্বাসের ছেলে।

গাজী আনিস কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তিনি ১৯৯১ সালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৯৩ সালে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি।

জানা গেছে, হেনোলাক্স নামে একটি কোম্পানির কাছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পান আনিস। দীর্ঘদিন ধরে এ টাকা না দেওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে
গতকাল সোমবার বিকেলে নিজের গায়ে আগুন দেন তিনি। দগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। আগুনে মুখমণ্ডলসহ তার শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, প্রেসক্লাবের ফটকের ভেতরে খোলা স্থানে আনিস নিজের গায়ে আগুন দেন। শোয়া অবস্থায় তার গায়ে আগুন জ্বলছে দেখে আশপাশ থেকে সবাই ছুটে যান। তারা পানি ঢেলে আগুন নেভান। তবে ততক্ষণে তার গায়ের পোশাক সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।

চলতি বছরের ২৯ মে হেনোলাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ডা. নুরুল আমিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও তার স্ত্রী ডা. ফাতেমা আমিনের বিরুদ্ধে ব্যবসায়িক অংশীদার বানানোর লোভ দেখিয়ে দুই কোটি ২৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন গাজী আনিস। এ সময় টাকা ফেরতসহ তাদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।

সেই সংবাদ সম্মেলনে গাজী আনিস জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সালে নুরুল আমিন ও ফাতেমা আমিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে ব্যবসায়িক অংশীদায়িত্বের সিদ্ধান্ত নেন তারা। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজী আনিস ব্যবসায় দুই কোটি ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে লভ্যাংশসহ মোট তিন কোটি টাকা আনিসকে ফেরত দেওয়া হবে মর্মে চুক্তি হয়। পরে কয়েক দফায় লাভের অংশ থেকে ৭৪ লাখ টাকা তারা আনিসকে দেয়। কিন্ত চুক্তি অনুযায়ী অবশিষ্ট দুই কোটি ২৬ হাজার (লাভসহ) টাকা ফেরত দেয়নি।

ওই সংবাদ সম্মেলনে গাজী আনিস আরও বলেছিলেন, দুই কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে গিয়ে তার সহায় সম্বল সব কিছু বিক্রি করতে হয়েছে। এখন তিনি নিঃস্ব। এ নিয়ে আদালতে দুটি মামলাও করেছেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর