পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরপরই সেতুর নাট-বল্টু খুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে পটুয়াখালীর এক যুবক। রোববার রাতেই সিআইডি আটক করেছে সেই যুবককে।
আটক ছেলেটির নাম বায়েজিদ তালহা। আটক হওয়ার পরই তার দলীয় পরিচয় নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা।
বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং যোগাযোগ মাধ্যমে বলা হচ্ছে আটক বায়েজিদ ছিলেন ছাত্রদলের কর্মী। পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বিপ্লব গাজীর অনুসারী হিসেবে ছাত্রদলের সাথে যুক্ত ছিলেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বিপ্লব গাজী। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বায়েজিদকে আমি চিনতামই না, এই নামে আমার সাথে ছাত্রদল করতো এমন কোনো কর্মী বা অনুসারী আমার ছিল না।’
তবে এরই মধ্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীর সাথে বায়েজিদের একটি ছবিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সেই সাথে আওয়ামী লীগের উপদেষ্ট মণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সাথেও একটি ছবি পাওয়া গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনের একটি ব্যানারের সামনে কয়েকজন বন্ধু মিলে দাঁড়িয়ে আছে এমন একটি ছবিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
পটুয়াখালী সদর উপজেলার লাউকাঠি ইউনিয়নের তেলিখালী গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক মো. আলাউদ্দিন মৃধার ছোট ছেলে এই বায়েজিদ। স্থানীয় গাবুয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও পটুয়াখালী সরকারী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। পরে স্নাতোকোত্তর সম্পন্ন করেন ঢাকা কলেজ কলেজ থেকে।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার পরই সেখানে ভিড় করেন উৎসুক জনতা। শুরু হয় নিয়ম ভাঙার হিড়িক। গাড়ি থামিয়ে ছবি তোলা, টিকটক ভিডিও বানানো, মূত্র বিসর্জনসহ নানা বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে।
কাইসার ৭১ (Kaisar 71) নামে একটি টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথমে বায়েজিদের পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলার ভিডিওটি আপলোড করা হয়। পরবর্তীতে ৩৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি ফেসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন সাইটে ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, পদ্মা সেতুর কংক্রিটের রেলিংয়ের ওপর থাকা লোহার রেলিংয়ের দুটি নাট খুলছেন বায়েজিদ। মূলত নাট দুটি দিয়ে কংক্রিটের রেলিং ও লোহার রেলিংয়ের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
নাট খুলে হাতে নিয়ে বায়েজিদকে বলতে শোনা যায়, ‘এই হলো আমাদের পদ্মা সেতু। আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু।’
এ সময় ক্যামেরার পেছন থেকে আরেকজনকে বলতে শোনা যায়, ‘নাট খুলে ভাইরাল করে দিয়েন না।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা।
এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার পর নেটিজেনদের মধ্যে দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছে। জাতীয় সম্পদ ধ্বংস করায় এক পক্ষ তার শাস্তি দাবি করছে। আবার একটি পক্ষ নির্মাণের ত্রুটি তুলে ধরায় তাকে ধন্যবাদ দেয়ার কথাও বলছে।