প্রতিনিধি, সিলেট প্রকাশের সময় :১৭ জুন, ২০২২ ৪:৩১ : অপরাহ্ণ
টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি। রাস্তাঘাট, দোকানপাটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সিলেট নগরীসহ পাঁচ উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আড়াই শ বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সড়ক তলিয়ে সারা দেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র ও বৈদ্যুতিক খুঁটি তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। রানওয়েতে পানি ওঠায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা তিনদিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার বেশিরভাগ এলাকাই পানিতে তলিয়ে গেছে। জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলারও বিস্তীর্ণ এলাকাও পানিবন্দি। সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, জকিগঞ্জ ও বিশ্বনাথ উপজেলায় পানি বাড়ছে। নগরীর অনেক এলাকা এখন পানির নিচে।
বাসা-বাড়িতে অনেক মানুষ কোমরপানি, গলাপানি পর্যন্ত বন্দি থাকার পর আজ ভোরে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বের হয়ে পড়ে। নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু সবাই নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটছে। মসজিদ, মাদ্রাসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।
বন্যাকবলিত এলাকার স্থানীয়রা জানিয়েছে, এই মুহূর্তে সুনামগঞ্জের সবার ঘরে খাওয়ার পানি নেই। বিদ্যুৎ নেই। মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ। পরিস্থিতি ক্রমে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
এমন অবস্থায় পানিতে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধারে কয়েকটি উপজেলায় সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে।
সিলেটের সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে সিলেট মহানগরীতে ৩১ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এখনও অনেকেই নিজেদের আসবাবপত্র রেখে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চাচ্ছেন না। তবে বন্যাকবলিত সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়ার চেষ্টা করবো।
সুনামগঞ্জে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আপাতত মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে আহ্বান করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর আহসান জামিল আনাস বলেছেন, ‘মানুষ উদ্ধারের জন্য সারা রাত ফোন করেছে। আমরা একটি নৌকা নিয়ে উদ্ধারের কাজ করেছি। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত শতাধিক পরিবারকে উদ্ধার করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদে তুলে দিয়েছি। এমন পরিস্থিতিতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি বিপাকে পড়েছে।’