রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৭ জুন, ২০২২ ৫:১৯ : অপরাহ্ণ
আগামী ২৫ জুন চালু হতে যাচ্ছে দেশের স্বপ্নের প্রকল্প পদ্মা সেতু। এ নিয়ে দেশজুড়ে একটা উৎসব ভাব বিরাজ করছে। পদ্মা সেতুর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে নানা আলোচনা সমালোচনা থাকলেও সেগুলো ছাপিয়ে সবার নজর এখন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ক্ষণের দিকে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতুর উদ্বোধন করবেন। দেশের গণমাধ্যমগুলো প্রতিদিন ফলাও করে পদ্মা সেতুর খবর ছাপছে।
বিদেশের নানা মিডিয়াতেও এখন গুরুত্ব পাচ্ছে পদ্মা সেতু ও বাংলাদেশের নাম। প্রায় প্রতিদিনই এ সংক্রান্ত খবর বের হচ্ছে বিদেশি গণমাধ্যমে।
পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন ও নির্মাণে প্রধান সহযোগী দেশ চীনের বিভিন্ন গণমাধ্যমেও দেশের বৃহত্তম এই সেতুর খবর গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হচ্ছে।
সম্প্রতি বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার বরাত দিয়ে সিনহুয়া নেট এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে’জ লারজেস্ট পদ্মা ব্রিজ টু ওপেন টু ট্রাফিক অন টুয়েন্টি ফাইভ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা সবচেয়ে বড় এবং চ্যালেঞ্জিং অবকাঠামো প্রকল্প। ভবিষত্যের ট্রান্স এশিয়া রেলপথ নেটওয়ার্কের জন্য পদ্মা সেতু গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া পদ্মা সেতু নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে চীনের জনপ্রিয় গণমাধ্যম পিপলস ডেইলির অনলাইন সংস্করন। এতে বলা হয়েছে কীভাবে একদল তরুণ চীনা একটি দেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছে। পদ্মা সেতু চীনা উদ্যোগ ‘এক পথ এক অঞ্চল’ কর্মসূচিতে ভুমিকা রাখবে সেই আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে পদ্মা সেতুর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডেপুটি হেড জো লিন বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণবাংলার মানুষ স্বল্প সময়ে রাজধানী ঢাকায় যেতে পারবে। পদ্মার স্রোত, বালির আলগা মাটিসহ পদ্মা সেতুতে কাজ করার সময়কার নানা চ্যালেঞ্জের কথাও বলেছেন তিনি।
তবে শেষ পর্যন্ত সেতুর উদ্বোধনের খবরে উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন এই চাইনিজ প্রকৌশলী। স্থানীয় জনগণকে বন্ধুবৎসল সহজ সরল পরোপকারী হিসেবে চিত্রিত করেছেন জো লিন।
অতিসম্প্রতি পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে আবারও নিজেদের প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে পিপলস ডেইলি। যদিও শিরোনাম হচ্ছে বিদেশের বড় বড় প্রকল্পগুলো কীভাবে চীনের মেড ইন চায়না ইমেজ বৃদ্ধি করছে তা নিয়ে। এতে চীন নির্মিত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বড় কয়েকটি প্রকল্পের মধ্যে পদ্মা সেতুর স্থান দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশিদের এক সময়কার স্বপ্ন সত্য হতে চলেছে। এই সেতুর উদ্বোধন শুধুমাত্র ফেরি বা নৌকায় নদী পার হওয়ার ইতিহাসের সমাপ্তি টানবে।
পদ্মা সেতু কীভাবে স্থানীয় মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাবে তাও এতে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে স্থানীয় যুবক হুমায়ুনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে শুরুতে তার ফুটপাতে একটা টং দোকান ছিল। এখন সেটা ফ্রায়েড চিকেনের দোকানে পরিণত হয়েছে।
হুমায়ুন উচ্ছাস প্রকাশ করে ওই প্রতিবেদনে বলেছেন, ‘সেতুর উদ্বোধন হলে আমার ব্যবসা আরও ভাল হবে।’
পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হলে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলা থেকে সহজে পণ্যসামগ্রী ঢাকায় যেতে পারবে।
এতে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড গতিশীল হবে উল্লেখ করে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে সেতুর কারণে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ১.৫ শতাংশ বেড়ে যাবে।
এই প্রতিবেদনেও দাবি করা হয়েছে পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ চীনা উদ্যোগ ‘এক পথ এক অঞ্চল’ কর্মসূচিতে ইতিবাচক অবদান রাখবে।
এছাড়াও পদ্মা সেতুর টোল, সেতুর নানা দিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ ও প্রচার করেছে চীনের জনপ্রিয় গণমাধ্যম চায়না ডেইলি, চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনাল, সিনহুয়া নিউজ এজেন্সিসহ অন্যান্য মিডিয়া।