নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৪ জুন, ২০২২ ১০:০৯ : পূর্বাহ্ণ
মাইল্ড হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭৭ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
গেলো শুক্রবার মধ্যরাতে হঠাৎ হৃদযন্ত্র ও শ্বাসযন্ত্রের জটিলতা শুরু হওয়ায় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সিসিইউতে ভর্তি করানোর পর শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বৈঠকে বসে খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড।
বৈঠকে খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রের জটিলতার জন্য এনজিওগ্রামসহ বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।
এনজিওগ্রামে তার হার্টে বেশ কয়েকটি ব্লক ধরা পড়ে। তার মধ্যে একটি ব্লক ছিল ৯৫ শতাংশ। তাৎক্ষণিকভাবে সেটিতে রিং পরানো হয়।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক শেষে চিকিৎসকরা জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো স্থিতিশীল নয়। তাকে হাসপাতালে আরও কিছুদিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, ম্যাডামের এনজিওগ্রাম করার পর মেডিক্যাল বোর্ড ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রেখেছেন, সেটা শেষ হবে আজ মঙ্গলবার। বিকেল ৫টায় আবার মেডিকেল বোর্ড বসবে। এটা নিয়মিত বৈঠক। চিকিৎসকরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন।
এর আগে বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত আরেক চিকিৎসক ডা. মামুন জানিয়েছিলেন, বিদেশে নেয়া ছাড়া চিকিৎসা সম্ভব নয়। বেগম খালেদা জিয়ার হার্টে এখনো দুটি ব্লক আছে। এ দুটি ব্লকের কারণে আবারও বেগম জিয়ার হার্টে রিং পরাতে হবে। আর সে জন্য তাকে দ্রুত বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন।
গত শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, খালেদা জিয়ার মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। হৃদযন্ত্রের প্রধান আর্টারিতে ধরা পড়েছে ৯৯ শতাংশ ব্লক। রিং পরানো হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি বেগম জিয়াকে বিদেশে নিতে আবারও আহ্বান জানান।
২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর এ নিয়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ দফায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলো।
গত ৬ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে একই হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল।
এর আগে চিকিৎসকরা খালেদা জিয়ার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা জিয়া। করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়া হয় তাকে। এরপর একাধিকবার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ায় সরকার। মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় আছেন।