রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৫ জুন, ২০২২ ১২:৫০ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে যখন আগুনের সূত্রপাত হয়, তখন ফেসবুক লাইভ করছিলেন অলিউর রহমান নামে স্থানীয় এক তরুণ। তখন ডিপোর কনটেইনারে আগুন নেভানোর কাজ করছিলেন ফায়ার সার্ভিসের ৮-১০ জন কর্মী। ৪০ মিনিট পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণেও ছিল। ৪১ মিনিটে দেখা যায়, বিকট শব্দে বিস্ফোরণ।
লাইভে থাকা অলিউর রহমান ঘটনাস্থল থেকে উড়ে গিয়ে দূরে ছিটকে পড়েন। তখনো লাইভটি চলছিল, সেখানে মানুষকে বলতে শোনা যায় ‘আল্লাহ, আল্লাহ বাঁচাও’।
গুটগুটে অন্ধকারে তখন শোনা যায়, দগ্ধ মানুষের আত্মচিৎকার আর ঘোঙানির শব্দ। এরপর স্ক্রিন অন্ধকার হয়ে যায়।
রাত ২টার দিকে অলিউর রহমানের লাশ আসে চট্টগ্রাম নগরীর বেসরকারী একটি হাসপাতালে।
আরও পড়ুন: ‘কালেমা পড়েছি, ক্ষমা করে দিও’
পরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা মৃতদেহের মধ্যে লাইভে থাকা অলিউর রহমানের পরিচয় শনাক্ত হয়। তার বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের ফটিগুলী গ্রামে। তিনি ওই এলাকার ফটিগুলি গ্রামের আশিক মিয়ার ছেলে। পরিবারের ৪ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে সে বড়।
দরিদ্র পরিবারের সন্তান হিসেবে প্রায় ৪ মাস পূর্বে একই গ্রামের বাসিন্দা মামুন মিয়া ঠিকাদারের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড বিএম কনটেইনার ডিপোতে শ্রমিকের কাজে যোগ দেন অলিউর রহমানের।
আজ রোববার সকালে পরিবারের কাছে খবর যায়, অলিউর রহমানের মারা গেছে। তার মৃত্যুতে পরিবারসহ গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ভাগ্য বদলে ৪ মাস পূর্বে চট্টগ্রামে যাওয়া বড় ছেলের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়েছেন বাবা আশিক আলী।
অলিউর রহমানের চাচা সুন্দর আলী মোবাইলে ফোনে জানান, আমাদেরকে গাড়ি নিয়ে হাসপাতালে যাবার জন্য বলা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে ওয়ালিউরের লাশ আনতে রওনা দিয়েছি।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, বিস্ফোরণের পর ফেসবুকে লাইভে থাকা তরুণ অলিউর রহমানকে হাসপাতালে আনা হয় মৃত অবস্থায়। তার পুরো শরীর ঝলসে গেছে।
রুয়েল নামে অলিউর রহমানের সহকর্মী বলেন, ‘আগুন লাগার পর আমরা অনেকে চলে আসি। কিন্তু অলিউর ফেসবুকে লাইভের জন্য থেকে যান। বিস্ফোরণে তিনি উড়ে যান। সেখানে ১০-১৫ জন ছিলেন। আমার মনে হয় সবাই মারা গেছেন। বিস্ফোরণের পর প্রায় দুই মিনিট শুধু বিকট শব্দ শোনা গেছে। যেন রকেট হামলার দৃশ্য।’
https://youtu.be/dnEoWTglQMY