নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১ জুন, ২০২২ ১:১৯ : অপরাহ্ণ
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচলকারী তৃতীয় যাত্রীবাহী ট্রেন ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ যাত্রা শুরু করলো।
৫৭ বছর পর চালু হওয়া ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ নামে যাত্রীবাহী ট্রেনটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করবে।
আজ বুধবার ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ঢাকার রেলপথে রওনা দেয় ট্রেনটি।
প্রথম দিন ট্রেনটিতে যাত্রী রয়েছে ১৭ জন। এর মধ্যে ভারতীয় যাত্রী ৪ জন ও বাংলাদেশি ১৩ জন।
সবুজ পতাকা দেখিয়ে ভার্চুয়ালি এই মিতালী এক্সপ্রেসের শুভ উদ্বোধন করেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ এবং বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
দিল্লিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে অবিভক্ত রেল ব্যবস্থা চালু করে গেছে ব্রিটিশরা। পাকিস্তানের সময় সে রেল ব্যবস্থা সেভাবে গড়ে ওঠেনি। মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেল। রেলের ইঞ্জিন, সেতু, কারখানা—সব ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমরা যুদ্ধের পর সে রেলব্যবস্থাকে পুনর্গঠন শুরু করেছি। রেলব্যবস্থাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবার গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আলাদা রেল মন্ত্রণালয় গড়ে তোলা হয়েছে। আমরা অবিভক্ত রেল ব্যবস্থাকে আবার চালু করছি।’
সূত্রমতে, ভারতীয় রেলকোচে পরিচালিত মিতালি এক্সপ্রেস’র প্রথম যাত্রা নিউ জলপাউগুড়ি থেকে শুরু করে ভারতের ৫৯ কিলোমিটার রেলপথ পাড়ি দিয়ে হলদিবাড়ির খালপাড়া সীমান্ত রেলগেট দিয়ে চিলাহাটি সীমান্তের ঢুকবে দুপুর বাংলাদেশের সময় ১টা ৫৫ মিনিট নাগাদ। এই দিনই ট্রেনটি রাত ১০টা ৩০ মিনিটে পৌঁছাবে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশনে।
ট্রেনটিকে চিলাহাটি স্টেশনে স্বাগত জানাতে অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ রেলের ও নীলফামারী জেলা প্রশাসনের উচ্চপদের কর্মকর্তারা।
এখন ট্রেনটি বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় সীমান্ত রেল করিডর এলাকায় দুই বাংলার হাজারো মানুষ।
রেল সূত্রে জানা গেছে, নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা পর্যন্ত ট্রেনটি অতিক্রম করবে ৫৯২ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভারতে অংশের পড়ছে ৫৯ কিলোমিটার। সময় লাগবে প্রায় ১১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট।
মিতালির যাত্রীদের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পাসপোর্ট-ভিসা পরীক্ষা করা হয়। যখন ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশনে যাত্রীরা নামবে সেখানেও একইভাবে ইমিগ্রেশন করা হবে।
মিতালী এক্সপ্রেস সপ্তাহে দুই দিন চলাচল করবে। ভারত থেকে প্রতি রোববার ও বুধবার এবং বাংলাদেশ থেকে প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার ছেড়ে যাবে।
পাক-ভারত যুদ্ধের সময় ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এই পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুনরায় নতুনভাবে দুই দেশ ১০ কিলোমিটার রেলপথ স্থাপন করে। এরপর পরীক্ষামূলকভাবে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন হয়েছিল।
সে সময়ে বাংলাদেশের চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে একটি পণ্যবাহী ট্রেন গিয়েছিল ভারতের হলদিবাড়ি পর্যন্ত। এরপর ২০২১ সালের পয়লা আগস্ট হতে এই পথে নিয়মিত পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করছে।