রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৯ মে, ২০২২ ৭:০৮ : পূর্বাহ্ণ
উৎসবের রঙ কি সাদা হয়? লড়াইটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ হলে হয় তো বটেই! ইউরোপ সেরার লড়াইয়ের বাজনা বাজতেই রিয়াল মাদ্রিদ যে ভিন্ন দল হয়ে যায়। ভাগ্য চলে আসে হাতের মুঠোয়।
তাই তো শনিবার রাতে প্যারিসে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে লিভারপুলকে ১-০ গোলে হারিয়ে ইউরোপসেরার মুকুট জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
ভিনিসিয়াস জুনিয়রের একমাত্র গোলে শিরোপা জিতে নিল তারা। তবে অবিশ্বাস্য কিছু সেভ করে লস ব্লাঙ্কোসদের জয়ের মূল নায়ক গোলরক্ষক থিবো কোর্তুয়া।
আসর জুড়ে প্রত্যাবর্তনের অবিশ্বাস্য কিছু গল্প লিখে ফাইনালে নাম লেখায় রিয়াল। তবে ফাইনালে এমন কিছু করতে হয়নি তাদের। প্রতিপক্ষকে আটকে রেখে একটি গোল করেই কাজটা সেরে ফেলে দলটি।
পুরো ম্যাচে প্রায় এক চেটিয়া খেলেও লক্ষ্যভেদ করতে না পারায় হারতে হলো রেডদের। ২৪ শট নিয়েও গোল আদায় করতে ব্যর্থ হয় তারা।
মাঝমাঠে দুই দলই প্রায় সমান সমান বল দখলে থাকলেও একের পর এক আক্রমণ করে লিভারপুল। ম্যাচের গোলটিই ছিল প্রথম লক্ষ্যে রাখা কোনো শট রিয়ালের।
অন্যদিকে প্রথমার্ধেই কমপক্ষে দুটি গোল পেতে পারতো লিভারপুল। তবে হয়নি ওই রিয়াল গোলরক্ষক কোর্তুয়ার কারণে। পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে নিশ্চিত দুটি সেভ করেন এ বেলজিয়ান গোলরক্ষক।
১৬তম মিনিটে রিয়ালের এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ডি-বক্সে দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে সালাহকে নিখুঁত এক কাটব্যাক করেন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড। আলতো টোকায় বল ঘুড়িয়ে দিয়ে লক্ষ্যের দিকে পাঠিয়েছিলেন সালাহ। কিন্তু ঝাঁপিয়ে পড়ে তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন কোর্তুয়া।
এরপর পাঁচ মিনিট পর তো অবিশ্বাস্য এ বেলজিয়ান গোলরক্ষক। থিয়াগো আলকানতারার কাছ থেকে বল পেয়ে দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে জোরালো শট নিয়েছিলেন সাদিও মানে। তবে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান কোর্তুয়া। বল তার হাতে লেগে বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে।
২৫তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়েছিলেন করিম বেনজেমা। যা সহজেই ধরে ফেলেন লিভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার। এটাই দলটি প্রথম শট। এমনকি প্রথমার্ধে এটাই ছিল তাদের একমাত্র শট। অন্যদিকে এ অর্ধে ১০টি শট নেয় লিভারপুল। যার ৫টি ছিল লক্ষ্যে।
তবে ৪৩তম মিনিটে ধারার বিপরীতে বল লিভারপুলের জালে পাঠিয়েছিলেন বেনজেমা। তবে বল নিয়ন্ত্রণের সময় অফসাইডে থাকায় গোল মিলেনি।
দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণের ধারা বজায় রেখে খেলতে থাকে রিয়াল। তবে ধারার বিপরীতে গোল আদায় করে নেয় দলটি। ৫৯তম মিনিটে ফেদে ভালভার্দের ক্রস থেকে অরক্ষিত অবস্থায় বল পেয়ে যান ভিনিসিয়াস জুনিয়র। বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি এ ব্রাজিলিয়ানের।
৬৪তম মিনিটে আবারও দুর্দান্ত কোর্তুয়া। হেন্ডারসনের কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ এক কোণাকোণি শট নিয়েছিলেন সালাহ। তবে তার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান রিয়াল গোলরক্ষক। পাঁচ মিনিট পর আবারও সালাহকে হতাশ করেন কোর্তুয়া। দিয়াগো জোটার হেড থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে জোরালো শট নেন এ মিশরীয় তারকা। তবে পা দিয়ে দারুণ দক্ষতায় ঠেকান কোর্তুয়া।
৭৪তম মিনিটে আলেকজান্ডার-আর্নল্ডের শটে কেবল পা লাগাতে পারলেই গোল পেতে পারতেন জোটা। ছয় মিনিট পর তো গোললাইন থেকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান কোর্তুয়া। সালাহর শট জটার পা লেগে দিক বদলে জালের দিকেই যাচ্ছিল। ৮২তম মিনিটে ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েও বাইরে মারেন বদলি খেলোয়াড় নেবি কেইটা।
৮২তম মিনিটে আবারও অবিশ্বাস্য কোর্তুয়া। সালাহর শট ঝাঁপিয়ে থাকেন এ গোলরক্ষক। এরপরও আরও কিছু সুযোগ ছিল দলটির। অলআউট খেলায় পাল্টা আক্রমণ থেকে সুযোগ ছিল রিয়ালেরও। তবে আর গোল না হলে ১-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে লস ব্লাঙ্কোসরা।
এর আগে ২০১৮ সালের ফাইনালেও একই হতাশার সঙ্গী হয়েছিল লিভারপুল। ওই ফাইনালে লিভারপুলকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল রিয়াল। এবারও তাই হলো। প্রিমিয়ার লিগের দলটিকে হতাশায় ডুবিয়ে ইউরোপসেরার মুকুট পরল কার্লো আনচেলত্তির দল।