নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :২৭ মে, ২০২২ ৭:১৬ : অপরাহ্ণ
পদ্মা সেতুতে বাড়তি ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতুর ৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। বাকি ৩০ হাজার কোটি টাকা কোথায় গেছে? দুবাইয়ের কোন অ্যাকাউন্টে গেছে? আমেরিকার কোন অ্যাকাউন্টে গেছে? মালেশিয়ার কোন অ্যাকাউন্টে গেছে? কানাডার কোন অ্যাকাউন্টে গেছে? কয়টা বাড়ি করা হয়েছে। কতগুলো প্রোপাইটি কিনেছেন? আমরা সব জানি। সব বের হবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর পুরাতন রেল ষ্টেশন চত্বরে বিএনপির এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন।
‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রীর হত্যার হুমকির প্রতিবাদে’ দলটির চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা শাখা কেন্দ্রঘোষিত এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু বলেন, ‘পদ্মা সেতু থেকে নাকি বেগম খালেদা জিয়াকে ফেলে দেবে। মনে হয় বাপের টাকা দিয়ে বিজ্র করেছি, এখানে কেউ উঠলে তাদের ফেলে দেবো। আরে টাকাটা কার?’
খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তাকে শেখ হাসিনা ভয় পায় উল্লেখ করে সাবেক এ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে নাকি ঠুস করে ফেলে দেবে। এর অনেকগুলো কারণ হতে পারে। একটি হলো শেখ হাসিনার চেয়ে খালেদা জিয়া জনপ্রিয়। যিনি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে এরশাদের পতন ঘটিয়েছেন। কিন্তু আপনি সেই এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশের সঙ্গে বেইমানি করেছেন। খালেদা জিয়া যখন সড়কে বের হবে, তখন লাখ লাখ মানুষ সমবেত হবে। সেটিকে আপনি ভয় পান। কারণ আপনি যখন সমাবেশ করতে যান, তখন পয়সা দিয়ে লোক আনলেও থাকতে চায় না।’
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির অন্যতম এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘উন্নয়ন দেখাচ্ছেন! বুঝবেন আর কয়দিন পরে। ডলার একশ টাকা পার হয়ে গেছে। আরে এই ডলারে যখন মালামাল আমদানি হবে, আরও যখন জিনিসপত্রের দাম বাড়বে, উন্নয়নের ঠেলা বুঝবেন। বিদেশে টাকা জমিয়েছেন চুরি করে, দুর্নীতি করে। দেশের মানুষ তো টাকা জমায়নি। তার আয় দিয়ে চলতে হবে। দেশের মানুষ কীভাবে চলবে?’
আমীর খসরু দাবি করেন, ‘আওয়ামী লীগ চালায় এখন সন্ত্রাসীরা। যারা সত্যিকারের আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতো তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমরা আর বাড়ি ফিরে যাবো না। ওদের মধ্যে কম্পন শুরু হয়েছে। ওরা কিন্তু পুলিশকে ব্যবহার করার চেষ্টা করবে। কিন্তু পুলিশতো বোকা নয়। পুলিশতো দেশের মানুষ। তার পরিবার আছে। তারা কি বুঝে না দেশের মানুষ কী চায়? বুকে সাহস রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। যখনই বিপদ আসবে তখন দেখবেন আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাবে।’
জনগণ আওয়ামী লীগকে বর্ডার পর্যন্ত নিয়ে যাবে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘মানুষ যখন হেরে যায় তখন বাঁচার জন্য শেষ চেষ্টা করে। এই জোয়ারে চুনোপুটি, ধামাচাপা পার্টি, চুরিচামারি পার্টি, হেলমেট লীগ, সন্ত্রাসী লীগ কোনো লীগই থাকবে না। এরা পালাতে পালাতে বর্ডার পর্যন্ত নিয়ে যাবে দেশের জনগণ। পালানোর পথ পাবে না এরা।’
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মা নদীতে টুস করে ফেলে দেওয়ার যে হুমকি দেওয়া হয়েছে তা রীতিমতো হত্যার হুমকি। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে শেখ হাসিনা যে ভাষায় কথা বলেছেন তা গোটা জাতির জন্য লজ্জাজনক। দেশবাসী তার কথায় বিস্মিত। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য যাবতীয় শিষ্টাচারকে অতিক্রম করেছে। গণতান্ত্রিক সভ্য দেশে কোনো প্রধানমন্ত্রীর মুখ দিয়ে এমন বক্তব্য বের হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হতো।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ প্রমুখ।