নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৬ মে, ২০২২ ১১:২৫ : পূর্বাহ্ণ
আড়াই বছরের বেশি কারাভোগের পর জামিন পাওয়া ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত সাবেক যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের হার্টের অবস্থা ভালো নয় বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম খান।
আজ সোমবার সকালে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে সাংবাদিকদের একথা জানান পরিচালক নজরুল ইসলাম খান।
নজরুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে জানান, যুবলীগ নেতা সম্রাটের চিকিৎসার বিষয়ে বোর্ড মিটিং হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। তার চিকিৎসা দেশেও হতে পারে। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবার চাইলে তাকে দেশের বাইরে নিতে পারে।
হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, সম্রাট এখনও চিকিৎসাধীন, পুরোপুরি সুস্থ নন। আজ সকালেও তাকে চিকিৎসকরা পর্যবেক্ষণ করেছেন। আরও ৩-৪ দিন পর্যবেক্ষণ করে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
ক্যাসিনোকাণ্ডে সম্রাট গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ৩১ মাস আগে। এর মধ্যে গত দেড় বছর তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে কারা তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গত বুধবার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে তিন শর্তে জামিন দেন আদালত।
শর্তগুলো হচ্ছে- আদালতের অনুমতি ছাড়া দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না সম্রাট, পাসপোর্ট জমা দিতে হবে এবং স্বাস্থ্যগত পরীক্ষার প্রতিবেদন আগামী ধার্য তারিখে জমা দিতে হবে।
সব মামলায় জামিন পাওয়ার পর গত বুধবার সম্রাটকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তি পেলেও চিকিৎসার জন্য তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের ‘ডি’ ব্লকের সিসিইউতে ভর্তি রাখা হয়।
হাসপাতালের পরিচালক নজরুল ইসলাম খান বলেন, একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের হার্টের ক্যাপাসিটি (কার্যক্ষমতা) ৬০-৬২ শতাংশ থাকা দরকার, সেখানে সম্রাটের আছে ৩১-৩৩ শতাংশ, কখনো ৩৪ শতাংশ ছিল।
২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে আত্মগোপনে চলে যান ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। এরপর ৭ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সেদিন বিকেলে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং ‘নির্যাতন করার’ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানানো হয় র্যাবের পক্ষ থেকে।
ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে সম্রাটকে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া ঢাকার রমনা থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করা হয়।
পরে অর্থ পাচার এবং অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে আরও দুটি মামলা করে সম্রাটের বিরুদ্ধে।
তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া ছয় মাসের সাজা আগেই শেষ হয়েছিল। অস্ত্র ও অর্থ পাচারের দুই মামলায় গত ১০ এপ্রিল এবং মাদক মামলায় ১১ এপ্রিল জামিন পান তিনি।