নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৩ মে, ২০২২ ৩:২৭ : অপরাহ্ণ
শ্রীলংকার রাজনৈতিক সঙ্কটের উদাহরণ টেনে সরকারকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো বিশেষজ্ঞ ধারণা করতে পারেননি শ্রীলংকার জনগণ যে তুষের আগুনে জ্বলছিল, তা বিস্ফোরণে পরিণত হবে। শ্রীলংকার জাতীয় বীর আজ জাতীয় ভিলেনে পরিণত হয়েছে।’
আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে যুব অধিকার পরিষদ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ভোজ্যতেলসহ দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে হুইল চেয়ারে চেপে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
শ্রীলংকার রাজনৈতিক সঙ্কটের উদাহরণ টেনে সরকারকে সতর্ক করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘একটি সুন্দর-শিক্ষিত-শান্তির দেশে হঠাৎ জনগণ ফুঁসে উঠবে, এটি কেউ ভাবতে পারেনি। তাই যতই ঠাট্টা করেন না কেন, দেশে জনগণের এই তুষের আগুন কখন অগ্নিস্ফুলিঙ্গে পরিণত হবে তা টেরও পাবেন না। তখন কী করে দৌড়ে পালাবেন, কোথায় যাবেন? তখন ভারতও আপনাদের ঢুকতে দেবে না। সুতরাং আপনাদের জনগণের কাছে আসতে হবে, জনগণের কথা ভাবতে হবে।’
বর্ষীয়ান এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে লিটারে ৩৮ টাকা। তারা মনে করছে, দুই টাকা তো কমই রাখা হয়েছে। ২০০ টাকা তো আর করা হয়নি। এই জাতীয় উপহাস দেশবাসী আর কত দেখবে? আমাদের ঈশান কোণে মেঘ জমেছে, আপনারা রক্ষা পাবেন না। এখনও সময় আছে। খোদার কাছে যেভাবে মাফ চান, জনগণের কাছেও তেমনি মাফ চান।’
খাদ্যদ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন কাজ নয় উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীরা আছেন, ভালো-ভালো কথা বলছেন। অনেক পরামর্শদাতা আছেন, যারা সৎ পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা বলছেন, মেগা প্রজেক্টের মায়া ছাড়েন, জনগণের কথা বলেন। তাদের পরামর্শ শোনা হয় কিনা জানি না।’
নিরপেক্ষ নির্বাচনে জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সর্বজনীন সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। আজ আমাদের সবার উদ্যোগ হতে হবে দেশের কল্যাণে, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায়, দেশকে কল্যাণকর একটি রাষ্ট্রে পরিণত করার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি জনগণের কথা ভাবুন। আমাদের সবাইকে নিয়ে বসুন, এক কাপ চা খাওয়ান। আমরা আপনাকে সৎ বুদ্ধি দেবো। সর্বদলীয় সরকারের নিয়ে চলুন আলোচনা করি। এমনও মানুষ আছে যারা দলকানা নয়, যারা দেশের জন্য সৎ পরামর্শ দেবে। নতুবা বাংলাদেশের অবস্থাও শ্রীলংকার মতো হবে।’
নিজের হাসপাতাল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘পরিশেষে একটি কথা বলতে চাই, আমি গরিবের হাসপাতাল চালাই। যেখানে সবচেয়ে কম খরচে গরিবরা চিকিৎসা পায়। সেই হাসপাতালে ৮০ লাখ টাকা ট্যাক্স ধরা হয়েছে। এর কারণ হলো হাসপাতালের জন্য বেড, ম্যাট্রেস আমরা আমদানি করেছি। নামিদামি কোনো হাসপাতাল যদি এগুলো আমদানি করত, তাহলে ট্যাক্সই দিতে হতো না। অথচ যেহেতু আমার গরিবের হাসপাতাল তারা ৮০ লাখ টাকা ট্যাক্স ধরেছে। এই টাকা কোথা থেকে আসবে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো উত্তর আসেনি।’